একজন গাড়িচালক হয়েও এত ক্ষমতা সিরাজ পায় কোথায়? এমন প্রশ্ন সিভিল এভিয়েশন বাংলাদেশ (ক্যাব)-এ নিত্যদিনের প্রশ্ন। উত্তরও প্রায় সবার জানাই ছিল। অন্তত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ আমলে সবার কাছেই পরিষ্কার ছিল ব্যাপারটি।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খানের নাম ভাঙ্গিয়ে চলতেন সিরাজ দৌলা। দাবি করতেন তার দাদাশ্বশুর সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আহাম্মদ আলী ফারুক খানের আস্থাভাজন। তাই সিরাজের দাপটে চুপ থাকতে হতো কর্মকর্তাদেরও। এমনকি সেই সময়ে ডিজিএফআইয়ের বিমানবন্দর ডেস্কে তিনি সোনা চোরাচালানের অপরাধে আটক হয়েও পেতে হয়নি কোনো শাস্তি। সেসময় তার বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে তাকে বদলি করাসহ নানা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। যার কপি এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
কিন্তু কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তখন আওয়ামী শক্তি খাটিয়ে রয়ে যান সিরাজ। তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা তো দূরে থাক, বদলি ও করতে পারেনি সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। সিরাজ আছেন। যেমন প্রভাবে ছিলেন তেমনই আছেন। প্রশ্ন- এভাবেই থাকবেন?
স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ তো এখন নেই তাহলে দোসর সিরাজ এখন কোথায়? এই প্রতিবেদক খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, সিরাজ দৌলা এখনো সিভিল এভিয়েশনে আছেন আগের মতোই। দাপটও কমেনি তার। এখন তবে পেছনে কে?
সিরাজের খোঁজে বিমানবন্দর এলাকায় গিয়ে দেখা মেলে সিরাজের। প্রথম দেখায় মোটেও গাড়িচালক মনে হয়নি তাকে। বেশভূষায় বেশ জমিদারি ভাব। যেন সত্যি তিনি নবাব সিরাজউদ্দৌলা। নামের যথা ব্যবহার, মন্দ নয়। কিন্তু একজন গাড়িচালক কিভাবে এত আয়েশী জীবন-যাপন করেন? এত আয়ের উৎস কী? সেই তথ্যও সংবাদের শুরুর দিকে দেওয়া আছে। একটি বৃহৎ সোনাচোরাকারবারি সিন্ডিকেট তৈরিতে সক্ষম হয়েছেন সিরাজ। হয়তো সেই টাকা দিয়েই এখনো টিকে আছেন সিভিল এভিয়েশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়।
ভেতরে ভেতরে নাখোস থাকলেও সিরাজের ব্যাপারে প্রকাশ্যে কথা বলার সাহস পায় না কেউ।