এনআইডির তথ্য ফাঁস ও বিক্রির অভিযোগে জয়-পলকসহ ১৯ জনের নামে মামলা

জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্য ফাঁস ও বিক্রির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এবং সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) তালেবুর রহমান বলেন, ‘কাফরুল থানায় সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করা হয়েছে।’

তথ্য বিক্রির মাধ্যমে আসামিরা প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন মর্মে অভিযোগ এনে এনামুল হক বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এ ছাড়া, মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, জয় ও পলক একটি সংগঠিত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নাগরিকদের এনআইডি তথ্য বিক্রির সুবিধা দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।

তারা জাতীয় নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত না করেই ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিসেস লিমিটেডকে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেনের জন্য এনআইডি ডেটা ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে।

এজাহারে আরও বলা হয়, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় ক্ষেত্রেই এই ডেটা প্রায় ১৮২টি জায়গায় বিক্রি করা হয়েছে, যার ফলে জননিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

মামলার অপর আসামিরা হলেন—ডেটা সেন্টারের সাবেক পরিচালক তারেক এম বরকতুল্লাহ, ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিসেসের পরিচালক ওয়াহিদুর রহমান শরীফ, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সাবেক নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মাহবুবুর রহমান, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের সাবেক পরিচালক (অপারেশন্স) আবদুল বাতেন, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ রক্ষণাবেক্ষণ প্রকৌশলী আশরাফ হোসেন, জাতীয় টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) লেফট্যানেন্ট কর্নেল (অব.) রাকিবুল হাসান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক উপসচিব মো. রেজাউল ইসলাম।

এ ছাড়ারও মামলার আসামি করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. হায়দার আলী, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের সাবেক উপাচার্য ডক্টর মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন নিবন্ধক অফিসের সাবেক সিস্টেম বিশ্লেষক অলিউল হাসান, আইসিটি বিভাগের সাবেক উপসচিব তবিবুর রহমান, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের সাবেক সহকারী পরিচালক (আইনি ও যাচাই) সারওয়ার হোসেন, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন শাখার সাবেক পরিচালক (নিবন্ধন ও প্রবাসী) আবদুল মমিন সরকার, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন শাখার সাবেক পরিচালক (বাজেট, হিসাব ও সাধারণ সেবার; ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম,  বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ম্যানেজার (সিকিউরিটি অপারেশন) মাহিদুর রহমান খান এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সফটওয়্যার ডেভেলপার সিদ্দিকুর রহমানকে।

 

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর সন্দেহভাজন এক এজেন্টকে গ্রেপ্তার করেছে পাকিস্তানের পুলিশ। মঙ্গলবার অবৈধ অস্ত্র ও বিস্ফোরক সহ তাকে তার নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পাকিস্তানের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন ইউনিট জানিয়েছে, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট সন্দেহে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার কাছ থেকে একাধিক অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা। এছাড়া এই অপরাধের ফলে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, এতে তাকে দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডন। 

এতে বলা হয়,  সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তির নাম মুহাম্মদ সেলিম। গত সোমবার পাকিস্তানের মনিপুর এলাকা থেকে ভারতীয় গয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর এজেন্ট সন্দেহে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানের অপরাধ তদন্তকারী সংস্থা স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন ইউনিট (এসআইইউ)। তাদের দাবি সেলিমের কাছে অবৈধ অস্ত্র এবং বিস্ফোরক পাওয়া গেছে। এছাড়া তার ঘর থেকে বেশ কিছু গোপন নথি উদ্ধার করেছে ইনভেস্টিগেশন ইউনিট।

মঙ্গলবার, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) সন্দেহভাজনকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৪ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। পরে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ডের পর তদন্তের বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্তকারী উচ্চ পদস্থ এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সন্ত্রাস দমন অভিযানের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকা থেকে হ্যান্ড গ্রেনেড, একটি রকেট লঞ্চার,  ৯ এমএম পিস্তল সহ বেশ কয়েকটি জাল সার্ভিস কার্ড জব্দ করা হয়।

সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তির কাছে একাধিক দেশের পাসপোর্ট এবং একাধিক জাতীয় পরিচয় পত্র রয়েছে। ব্যক্তিগত এসব ডকুমেন্টে একাধিক নাম, পরিচয় ব্যবহার করেছে ‘র’ এর সন্দেহভাজন ওই এজেন্ট।

তিনি বেশ কয়েকবার ভিন্ন পরিচয় পত্র এবং পাসপোর্ট নিয়ে নেপাল হয়ে ভারতে প্রবেশ করেছেন। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, করাচিতে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড সৃষ্টিতে ‘র’ এর হয়ে কাজ করছিলেন মুহাম্মদ সেলিম। তিনি গোপনে স্থানীয় সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহের কাজে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ করেছে এসআইইউ।

সংবাদ

এনআইডির তথ্য ফাঁস ও বিক্রির অভিযোগে জয়-পলকসহ ১৯ জনের নামে মামলা

‘র’ এর এজেন্ট গ্রেপ্তার

রাষ্ট্র সংস্কারে জামায়াতের ১০ প্রস্তাব

রাষ্ট্র সংস্কারে সেক্টর অনুযায়ী আলাদা আলাদা ১০টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বুধবার দুপুর সোয়া ১২টায় রাজধানীর গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত ‘রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাবনা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা।

জামায়াতে ইসলামী জানায়, ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর তৎকালীন সেনা সমর্থিত সরকারের সাথে সমঝোতা করে অবৈধভাবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করে। তারা দেশকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার জন্য সংবিধানসহ সিভিল প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিচার বিভাগকে কুক্ষিগত করে একনায়কতন্ত্র কায়েম করে। তারা নিজেদের সুবিধামতো সংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদ পরিবর্তন করে।

২০১১ সালের ৩০ জুন পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করা হয়। এ সংশোধনীর মাধ্যমে কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি বাতিল করে দেয়া হয়। নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থা, সাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহ, শিক্ষা, সংস্কৃতি, দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং ধর্মীয় মূল্যবোধকে ধ্বংস করে দেয়।

রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিরোধীমত দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। দুর্নীতি, ব্যাংক লুটপাট, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি ও বিদেশে অর্থ পাচারের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে দেয়। হত্যা, গুম এবং মিথ্যা, সাজানো ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলার মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা দায়ের করে জেল-জুলুম ও নির্যাতন চালানো হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে দেড় সহস্রাধিক প্রাণের বিনিময়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যান। ৮ আগস্ট গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের প্রধান দায়িত্ব হলো স্বল্পতম সময়ের মধ্যে মৌলিক সংস্কার সম্পন্ন করে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও অর্থবহ করার জন্য নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন। সংস্কার ব্যতীত নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে পারে না।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান প্রধান সেক্টরের সংস্কারের জন্য নিম্নোক্ত প্রস্তাবনাগুলো তুলে ধরা হয় :

১। আইন ও বিচার

● উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগের জন্য সুষ্ঠু ও সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।

● বিচার বিভাগ থেকে দ্বৈত শাসন দূর করতে হবে।

● বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথকীকরণের কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

● আইন মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা করে সুপ্রিম কোর্টের অধীনে পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

● ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার স্বার্থে বিদ্যমান আইনসমূহের প্রয়োজনীয় সংশোধনী ও গণমানুষের মূল্যবোধের সাথে সামঞ্জস্যশীল আইন প্রণয়ন করতে হবে।

● ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩  ও সকল কালো আইন বাতিল করতে হবে।

● বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা কমাতে বিভাগীয় পর্যায়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

● নিম্ন আদালতের যথাযথ স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য পৃথক বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন করতে হবে।

● সকল ফৌজদারি মামলা তদন্তের জন্য স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।

● দেওয়ানি মামলার জন্য সর্বোচ্চ ৫ বছর এবং ফৌজদারি মামলাসমূহ সর্বোচ্চ ৩ বছরের মধ্যে নিষ্পত্তি করার বিধান করতে হবে।

 

২। সংসদ বিষয়ক সংস্কার

● সংসদের প্রধান বিরোধীদল থেকে একজন ডেপুটি স্পিকার মনোনীত করতে হবে।

● সংসদীয় বিরোধী দলীয় নেতার নেতৃত্বে ছায়া মন্ত্রিসভা গঠনের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

● সংসদে বিরোধী দলীয় সদস্যদের পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে।

 

৩। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার

● জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক ব্যবস্থা (Proportional Representation-PR) চালু করতে হবে।

● সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে স্থায়ীভাবে সন্নিবেশিত করতে হবে।

● নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন দেশে প্রত্যাখ্যাত ইভিএম ভোটিং ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে।

● কোনো সরকারি চাকরিজীবী তাদের চাকরি ছাড়ার কমপক্ষে ৩ বছরের মধ্যে কোনো ধরনের নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।

● স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয়ভাবে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করতে হবে।

● অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক ২০০৮ সালে প্রবর্তিত রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রথা বাতিল করতে হবে।

● নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনার নিয়োগের জন্য প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা ও প্রধান বিচারপতির সমন্বয়ে সার্চ কমিটি গঠিত হবে।

● জাতীয় সংসদ নির্বাচন একাধিক দিনে অনুষ্ঠিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

● NID- ব্যবস্থাপনা নির্বাচন কমিশনের অধীনে আনতে হবে।

 

৪। আইনশৃঙ্খলা সংস্কার

ক) পুলিশ বাহিনীর সংস্কার

● ১৮৬১ সালে ব্রিটিশ সরকার প্রণীত পুলিশ আইন পরিবর্তন এবং পুলিশের জন্য একটি পলিসি গাইডলাইন তৈরি করতে হবে।

● পুলিশ সদস্যদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি এবং চাকরিচ্যূতির জন্য স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন করতে হবে।

● নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি এবং চাকরিচ্যূতির ক্ষেত্রে কোনো রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক ব্যক্তির সুপারিশের সুযোগ রাখা যাবে না তথা সর্বপ্রকার দলীয় ও ব্যক্তিগত প্রভাব বা হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে।

● পুলিশ ট্রেনিং ম্যানুয়ালের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষা ও নৈতিক অনুশাসন অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

● পুলিশের মধ্যে মারণাস্ত্রের ব্যবহার বাতিল করতে হবে।

● রিমান্ড চলাকালে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে আসামি পক্ষের আইনজীবীর উপস্থিতি এবং মহিলা আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাদের অভিভাবকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।

● বিচার বিভাগীয় সদস্যদের দ্বারা পুলিশ ট্রাইব্যুনাল গঠনের বিধান থাকতে হবে।

● পুলিশের ডিউটি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা উন্নত করতে হবে।

● ‘পুলিশ আইন’ পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও পরিমার্জনের মাধ্যমে আধুনিকায়ন করতে হবে।

 

খ) র‌্যাব বিষয়ক সংস্কার

● র‌্যাব ও অন্যান্য বিশেষায়িত বাহিনীর প্রতি জনসাধারণের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে।

● গত সাড়ে ১৫ বছর যারা র‌্যাবে কাজ করেছে তাদেরকে স্ব স্ব বাহিনীতে ফিরিয়ে আনতে হবে এবং তাদেরকে পুনরায় র‌্যাবে নিয়োগ দেয়া যাবে না।

● বিচারবহির্ভূত সকল প্রকার হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে।

● র‌্যাবের সামগ্রিক কার্যক্রম মনিটরিং-এর জন্য সেল গঠন করতে হবে। কোনো র‌্যাব সদস্য আইনবহির্ভূত কোনো কাজে জড়িত হলে এই সেল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করবে।

● মিডিয়ার ক্ষেত্রে নীতিমালা প্রণয়ন ও অনুসরণ নিশ্চিত করতে হবে।

 

৫। জনপ্রশাসন সংস্কার

● জনবল নিয়োগ, বদলি, পদায়নে তদবির, সুপারিশ ও দলীয় আনুগত্যের পরিবর্তে যোগ্যতা, দক্ষতা ও সততাকে প্রাধান্য দিতে হবে।

● যে কোনো চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি থেকে শুরু করে নিয়োগ পর্যন্ত সময়ক্ষেপণ না করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।

● সরকারি চাকরিতে আবেদন বিনামূল্যে করতে হবে।

● চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আগামী ২ বছরের জন্য ৩৫ বছর ও পরবর্তী বয়সসীমা স্থায়ীভাবে ৩৩ বছর এবং অবসরের বয়সসীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করতে হবে।

● চাকরির আবেদনে সকল ক্ষেত্রে বয়সসীমার বৈষম্য নিরসন করতে হবে।

● সকল সরকারি দপ্তরে দুর্নীতি নিরোধকল্পে বিশেষ ব্যবস্থা তৈরি করা যাতে করে কেউ দুর্নীতি করার সুযোগ না পায়। এ জন্য প্রয়োজনীয় মনিটরিং-এর ব্যবস্থা করতে হবে।

● চাকরিতে বিরাজমান আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করতে হবে।

● বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে সরকারি চাকরিতে যারা প্রশ্নপত্র ফাঁস, দুর্নীতি, জালিয়াতি ও দলীয় বিবেচনায় চাকরি পেয়েছে তাদের নিয়োগ বাতিল করতে হবে।

 

৬। দুর্নীতি

● দুর্নীতি দমন কমিশনে পরীক্ষিত সৎ, ন্যায়পরায়ণ, দক্ষ ও যোগ্য লোক নিয়োগ দিতে হবে।

● রাষ্ট্রের সকল সেক্টরে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

● দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার স্বাধীনতা দিতে হবে।

● বিগত সরকারের আমলে দেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার উপযুক্ত বিধান প্রণয়ন ও তা কার্যকর করার পদক্ষেপ নিতে হবে।

● মন্ত্রণালয় ভিত্তিক দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করতে হবে।

● দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনসংস্কার, জনবল ও পরিধি বৃদ্ধি করতে হবে।

● রাষ্ট্রীয় ও জনগণের সম্পদ অবৈধভাবে ভোগ দখলকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সুস্পষ্ট আইন প্রণয়ন করতে হবে।

 

৭। সংবিধান সংস্কার

● রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য রাখার বিধান সংযুক্ত করতে হবে।

● একই ব্যক্তি পরপর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না।

 

৮। শিক্ষা ও সংস্কৃতি সংস্কার

ক) বিরাজমান সমস্যার আলোকে শিক্ষা সংস্কার প্রস্তাব

● ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিক এবং একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিকে উচ্চমাধ্যমিক হিসেবে বলবৎ রাখতে হবে। অষ্টম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষা বাতিল করে পূর্বের পরীক্ষা পদ্ধতি ফিরিয়ে আনতে হবে।

● পাঠ্যপুস্তকে ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস গুরুত্বের সাথে তুলে ধরতে হবে।

● সকল শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে ধর্মীয় মূল্যবোধবিরোধী উপাদান বাদ দিতে হবে।

● সকল শ্রেণিতে নবী করিম( সা.) এর জীবনীসহ মহামানবদের জীবনী সংবলিত প্রবন্ধ সংযোজন করতে হবে।

● স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিদ্যমান স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসাগুলোকে সরকারিকরণ করতে হবে।

● প্রতিটি জেলায় কমপক্ষে একটি করে কামিল মাদরাসাকে সরকারিকরণ করতে হবে।

● কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষাকে সাধারণ শিক্ষার মূলধারায় যুক্ত করতে হবে।

● Department of Higher Education নামে একটি স্থায়ী শিক্ষা কমিশন গঠন করতে হবে।

● শিক্ষা সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত শিক্ষা কমিশনের সকল ধারা তথা সাধারণ, আলিয়া, কওমীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

 

খ) সংস্কৃতি সংস্কার

● জাতির ঐতিহাসিক আন্দোলন-সংগ্রাম ও মূল্যবোধের আলোকেবিভিন্ন ধরনের চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে।

● জাতির ঐতিহাসিক দিনগুলোকে স্মরণীয় করার লক্ষ্যে বিশেষ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় তা পালনের ব্যবস্থা করতে হবে।

● নাটক, সিনেমাসহ বিভিন্ন বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানগুলো অশ্লীলতামুক্ত করতে হবে। নাটক, সিনেমা ও বিভিন্ন কন্টেন্টে বিভিন্ন ধর্ম, বিশেষ করে ইসলামকে হেয় করা থেকে বিরত থাকার বিধান প্রণয়ন করতে হবে।

● প্রাণীর মূর্তিনির্ভর ভাস্কর্য নির্মাণ না করে দেশীয় প্রকৃতি, ঐতিহ্যকে বিভিন্ন চিত্রাঙ্কন-ভাস্কর্যে তুলে আনতে হবে।

● সকল গণমাধ্যমে শিক্ষামূলক প্রোগ্রাম প্রচার নিশ্চিত করতে হবে।

 

৯। পররাষ্ট্র বিষয়ক সংস্কার

● পররাষ্ট্রীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে সকল গণতান্ত্রিক দেশের সাথে সাম্য ও নায্যতার ভিত্তিতে পারস্পরিক সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।

● জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় চীন, নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার আন্তর্জাতিক নদীসমূহের পানিবণ্টন চুক্তির উদ্যোগ নিতে হবে।

● আসিয়ানভুক্ত দেশসমূহের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে হবে।

● অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে বিগত সরকারের আমলে সম্পাদিত সকল চুক্তি রিভিউ করতে হবে। এক্ষেত্রে একটি রিভিউ কমিশন গঠন করতে হবে।

● বাংলাদেশকে আসিয়ান জোটভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

● শক্তিশালী SAARC পুনর্গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

● কোনো দেশের সাথে চুক্তি অথবা সমঝোতা চুক্তি হলে পরবর্তী সংসদ অধিবেশনে সেসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক উত্থাপন করে বিস্তারিত আলোচনাপূর্বক তা অনুমোদন করতে হবে।

 

১০। ধর্ম মন্ত্রণালয় সংস্কার

● ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশকে (ইফাবা) রাষ্ট্রের কল্যাণে অর্থবহ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

● ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিকে স্বতন্ত্র সংস্থা বা দপ্তরে রূপান্তর করতে হবে, যাতে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে।

● ইসলামিক মিশনকে সরাসরি মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বতন্ত্র সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

● হজ্জ ব্যবস্থাপনার জন্য স্বতন্ত্র অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

● হজ্জ ও উমরার খরচ কমানোর জন্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

● ইসলামিক ফাউন্ডেশনে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যেখানে দেশের বরণ্যে আলেমগণ সম্পৃক্ত থাকবেন।

● বিতর্কিত সকল বই বাতিল ও প্রকাশনা বন্ধ করতে হবে।

● সকল ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

 

৩ অতিরিক্ত আইজিপিকে বাধ্যতামূলক অবসর

র‍্যাবের সদ্য সাবেক মহাপরিচালক পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি ব্যারিস্টার মো. হারুন অর রশিদসহ তিন অতিরিক্ত আইজিপিকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার।

বাকি দুই কর্মকর্তা হলেন- হাইওয়ে পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. শাহাবুদ্দিন খান এবং ডিএমপির সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার (অতিরিক্ত আইজিপি সুপারনিউমারারি) বর্তমানে ট্যুরিস্ট পুলিশে কর্মরত ড. খ. মহিদ উদ্দিন।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন প্রজ্ঞাপন তিনটিতে সই করেন।

রাজবাড়ীতে দুর্গাপূজা মণ্ডপের প্রতিমা ভাঙচুর

রাজবাড়ীতে একটি দুর্গাপূজা মণ্ডপের প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে রাজবাড়ী-ফরিদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে সজ্জনকান্দা জেলা সড়ক পরিবহন মালিক ঐক্য পরিষদ মন্দিরে এ ঘটনা ঘটে বলে জেলা পুলিশ সুপার পুলিশ সুপার মোছা. শামিমা পারভীন জানান।

মন্দিরের দুর্গা, ক‌ার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী ও সরস্বতী- পাঁচটি প্রতিমার বিভিন্ন অংশ ভাঙচুর করা হয়েছে। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা মন্দির পরিদর্শন করেছেন।

রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মোছা. শামিমা পারভীন জানান, সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে যেকোনো সময় কে বা কারা মন্দিরের ভেতর ঢুকে কয়েকটি প্রতিমার মুখের কিছু অংশ ভেঙে ফেলে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

এদিকে সন্ধ্যার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিমা ভাঙচুরের বিষয় ছড়িয়ে পড়লে নিন্দার ঝড় ওঠে। অনেকেই ঘটনার সঠিক তদন্ত দাবি করে দোষীদের বিচার চান।

মন্দিরের আয়োজকদের একজন কুঞ্জন কান্তি সরকার জানান, অস্থায়ীভাবে মন্দির তৈরি করে রাজবাড়ী- ফরিদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়। মন্দিরের পেছনে বাস মালিক সমিতির কার্যালয়। রাতে মন্দিরে পাহারার ব্যবস্থা ছিল। সকালে পাহারাদার চলে যায়।

তিনি বলেন, বেলা ১১টার দিকে ডেকোরেটার শ্রমিক মন্দিরে সিসি ক্যামেরা লাগানো ও সাজসজ্জার কাজ করতে আসে। সে সময় ডেকোরেশন মিস্ত্রি লোকমান দেখে বিষয়টি তাকে জানালে তিনি প্রতিমার কাছে গিয়ে দেখেন কয়েকটি প্রতিমার বিভিন্ন অংশ ভাঙচুর করা হয়েছে।

এসময় তিনি আরও বলেন, ‘কে বা কারা এ কাজ করেছে সেটা আমরা জানি না।’

সজ্জনকান্দা সার্বজনীন দু্র্গা মণ্ডপের সভাপতি সাধন চন্দ্র দাস বিষয়টি নিয়ে কোনো কথা বলেননি সাংবাদিকদের সাথে।

পুলিশ সুপার বলেন, প্রতিমা ভাঙচুরের খবর মন্দির কমিটির কেউ জানায়নি আমাদের। আমরা আমাদের সোর্সের মাধ্যেম খবর পেয়ে মন্দির পরিদর্শন করেছি। প্রতিমা ভাংচুরের বিষয়ে তদন্ত চলছে। সেই সাথে যারা এঘটনার সাথে জড়িত তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা শহরের প্রতিটি মন্দিরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে মন্দির কর্তৃপক্ষকে অনেকবার অনুরোধ করেছি। কিন্তু এই মন্দিরে আজকে ঘটনা ঘটার পর সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছে।

‘পূজামণ্ডপের এক কিলোমিটারের মধ্যে পাগল ঢুকতে দেওয়া যাবে না’

শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষ্যে মাগুরার শ্রীপুরে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাখী ব্যানার্জীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৮৮ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মিজানুর রহমান।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে পূজা উপলক্ষ্যে সরকারের নির্দেশনা তুলে ধরে বলেন, পূজামণ্ডপের এক কিলোমিটারের মধ্যে পাগল ঢুকতে দেওয়া যাবে না। সকল পূজামণ্ডপে সিসি ক্যামেরা বা আইপি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে, সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসার বাহিনীর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করতে হবে।

সভায় উপজেলার ৮ ইউনিয়ন পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শ্রীপুর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ১৪ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মনিরুল ইসলাম শ্রীপুর আর্মি ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর মাহদি হাসান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মনোরঞ্জন সরকার, সাধারণ সম্পাদক রমেন্দ্রনাথ বিশ্বাস প্রমুখ।

 

খেলা

কানপুর টেস্টে ৭ উইকেটের জয় তুলে নিল ভারত। দুইদিনেরও কম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশকে হারাল ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ টেবিলের শীর্ষ দলটি।

আজ পঞ্চম ও শেষ দিন স্বাগতিকদের মাত্র ৯৫ রানের টার্গেট দিতে সমর্থ হয় সফরকারীরা। ৩ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৭.২ ওভারেই এই রান তুলে নেয় রোহিত শর্মার দল।

আজ মঙ্গলবার ২ উইকেটে ২৬ রান নিয়ে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশ প্রথম সেশনে ১৪৬ রানে গুটিয়ে যায়। খুবই সহজ একটি টার্গেটের সামনে পড়ে ভারত। জশস্বী জয়সোয়াল (৫১) ও বিরাট কোহলির (২৯*) ব্যাটে ভর দিয়ে টার্গেট ছুঁয়ে ফেলে স্বাগতিক দল।

বৃষ্টির কারণে প্রথম দিন ৩৫ ওভারের খেলা হয়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন বৃষ্টি ও আলোকস্বল্পতা কোনো খেলাই হয়নি। চতুর্থ দিন জমজমাট লড়াইয়ে ১৮ উইকেটের পতন হয় দুই দলের। ভারত আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ম্যাচের ফল নির্ধারণের আপ্রাণ চেষ্টা করে। লক্ষ্যপূরণ হয়েছে তাদের। পঞ্চম ও শেষ দিন এক সেশনেরও বেশি সময় হাতে রেখে তারা বিজয়ী হয়েছে।

পাঁচ দিন মিলে ৪৫০ ওভারের খেলা হওয়ার কথা। যদিও সেখানে খেলা হয়েছে মাত্র ১৭২.২ ওভারের, যা দুই দিনেরও কম! শেষ দিন ৪৫ ওভারের মতো খেলা বাকি ছিল। এই সময়ের মধ্যেই দাপট দেখিয়ে জিতল ভারত। মূলত, রোহিত শর্মারা হারালেন বৃষ্টি, সময় আর বাংলাদেশ—এই তিন প্রতিপক্ষকে।

বয়স মাত্র ৩৩। চাইলে অনায়াসেই আরও চার-পাঁচ বছর আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলে যেতে পারতেন আন্তোনিও গ্রিজম্যান; কিন্তু তা না, হঠাৎ করেই আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলে দিলেন টানা দু’বার বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা ফ্রান্সের এই ফুটবলার।

বিশ্বকাপের দুই ফাইনালের প্রথম বার জয় করেছিলেন, পরেরবার হেরেছেন মেসির আর্জেন্টিনার কাছে। স্পেনের ঘরোয়া লিগ লা লিগায় মাদ্রিদ ডার্বিতে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে খেলার পর সোমবার এক ভিডিও বার্তায় এ ঘোষণা দেন তিনি।

বিশ্বকাপের দুই ফাইনাল ছাড়াও ২০১৬ ইউরোর ফাইনাল খেলেছিলেন তিনি। যেটাতে হেরেছিলেন পর্তুগালের কাছে। এছাড়া ২০২১ সালের উয়েফা নেশন্স লিগও জিতিয়েছেন ফ্রান্সকে।

সর্বশেষ ১০ সেপ্টেম্বর উয়েফা নেশন্স লিগে বেলজিয়ামের বিপক্ষে ফ্রান্সের জার্সি গায়ে খেলেছিলেন তিনি। এছাড়া সর্বশেষ ইউরো চ্যাম্পিয়শিপের সেমিফাইনালে স্পেনের কাছে যে দলটি হেরেছে, সেই দলেরও অংশ ছিলেন তিনি।

আধুনিক ফ্রান্স ফুটবল দলের অন্যতম সফল তারকা গ্রিজম্যান। ভিডিও বার্তায় জাতীয় দল, সমর্থক এবং সতীর্থদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন এই মিডফিল্ডার।

অভিষেকের পর গত ১০ বছরে ফ্রান্সের হয়ে ১৪৭টি ম্যাচ খেলেছেন। গোল করেছেন ৪৪টি। তবে শুধু গোলসংখ্যা দিয়ে তাকে বর্ণনা করা যাবে না। খেলা তৈরি করা এবং অক্লান্ত পরিশ্রম করার জন্য সুনাম রয়েছে তার। আক্রমণ এবং রক্ষণ দুই বিভাগের প্রতিনিয়ত দলকে সাহায্য করে গেছেন।

২০১৮ বিশ্বকাপের ফাইনাল জেতা গ্রিজম্যানের জীবনের অন্যতম সেরা কীর্তি। ফাইনালে দলকে ট্রফি জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও রেখেছিলেন। ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ হারানোর ম্যাচে গোল করেন তিনি। সেবারের বিশ্বকাপে চারটি গোল এবং চারটি অ্যাসিস্ট ছিল তার। গ্রিজম্যানের খেলা নজর কেড়েছিল সবার।

জাতীয় দলের হয়ে ২০১৪ সালে অভিষেক হয়। এরপর থেকে দিদিয়ের দেশমের দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন তিনি। মূলত মাঝমাঠের আসল কান্ডারি ছিলেন গ্রিজম্যান।

ফ্রান্সকে বিদায় জানালেও ক্লাব ফুটবলে খেলা চালিয়ে যাবেন। পেশাদার জীবনের বেশির ভাগ সময়ই কাটিয়েছেন অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে। মাঝে তিন বছর ছিলেন বার্সেলোনায়। আবার অ্যাটলেটিকোয় ফিরেছেন। রোববার রাতে মাদ্রিদ ডার্বিতেও খেলেছেন। ম্যাচটি ১-১ ড্র হয়েছে।

 

দুটি পরিবর্তন নিয়ে ফিল্ডিং বাংলাদেশের

টানা চার ম্যাচ হারের পর বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার শঙ্কা বাড়ছে বাংলাদেশের। ঘুরে দাঁড়াতে এবার ডাচদের সামনে মরিয়া সাকিবরা। শক্তিমত্তা বিবেচনায় ডাচদের চেয়ে ঢের এগিয়ে টাইগাররা। তবে তাদের সাম্প্রতিক ফর্ম চিন্তার বড় কারণ। একই সঙ্গে বাড়তি চাপও আছে সাকিবের দলের। আসরে টিকে থাকতে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই তাদের। তবে টসে হেরে ফিল্ডিং করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।

বাংলাদেশের একাদশে এসেছে দুই পরিবর্তন। বাদ পড়েছেন নাসুম আহমেদ ও হাসান মাহমুদ। নাসুমের জায়গায় নেয়া হয়েছে শেখ মেহেদি হাসানকে। ডানহাতি স্পিনের সঙ্গে ব্যাটটাও চালাতে পারেন তিনি। তাই ব্যাটিংয়ে বাড়তি বিকল্প পাচ্ছে দল। পেস বিভাগে হাসানের বদলি চোট কাটিয়ে দলে ফেরা তাসকিন আহমেদ

নেদারল্যান্ডস একাদশ- ম্যাক্স ও’ডাউড, বিক্রমজিৎ সিং, ওয়েসলি বারেসি, কলিন অ্যাকারম্যান, স্কট এডওয়ার্ডস, বাস ডি লিডি, সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট, লোগান ফন বেক, শরিজ আহমেদ, আরিয়ান দত্ত, পল ফন মিকারেন।

বাংলাদেশ একাদশ- লিটন দাস, তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, শেখ মেহেদী হাসান, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম।

সাকিবকে ছোঁয়া কোহলির ইনিংসটি ‘ভারত চিরকাল মনে রাখবে’

দিল্লি ক্যাপিটালসের ‘এক্স’ হ্যান্ডল থেকে ছবিটি পোস্ট করা হয়েছে। ক্রিজে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আঙুল উঁচিয়ে কিছু একটা দেখাচ্ছেন কোহলি। জায়ান্ট স্ক্রিনে ভেসে উঠেছে একটি লেখা, ‘ম্যায় হুঁ না ইন্ডিয়া’—অর্থাৎ, (ভেবো না) ভারত, আমি তো আছি! ছবিটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘ভারত এই ৯৫ চিরকাল মনে রাখবে।’

বিনোদন
মতামত

বাংলাদেশ সফরের জন্য ঘোষিত দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট স্কোয়াডে আছেন তিনজন বিশেষজ্ঞ স্পিনার। বাঁহাতি স্পিনার কেশব মহারাজ ও অফ স্পিনার ডেন পিটকে রাখার পাশাপাশি ফেরানো হয়েছে সেনুরান মুতুসামিকে। এই স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার ক্রিকেটের দীর্ঘতম সংস্করণে শেষবার খেলেছিলেন গত বছরের মার্চে।

সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ১৫ সদস্যের স্কোয়াড দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ড (সিএসএ)। বরাবরের মতো অধিনায়কের ভূমিকায় আছেন টেম্বা বাভুমা। দলে টেস্ট অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা একজনই আছেন— উইকেটরক্ষক-ব্যাটার ম্যাথু ব্রিটজকি। তিনি এখন পর্যন্ত আটটি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন আন্তর্জাতিক মঞ্চে।

দুই অভিজ্ঞ পেসার লুঙ্গি এনগিডি ও আনরিখ নরকিয়াকে স্কোয়াডে রাখেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্রামে থাকায় নেই মার্কো ইয়ানসেন ও জেরাল্ড কোয়েটজি। বিশেষজ্ঞ পেসার হিসেবে সুযোগ পেয়েছেন কাগিসো রাবাদা, নান্দ্রে বার্গার ও ডেন প্যাটারসন। আছেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার ভিয়ান মুল্ডার।

দলনেতা বাভুমার পাশাপাশি ব্যাটিং বিভাগে আছেন এইডেন মার্করাম, টনি ডি জর্জি, ডেভিড বেডিংহ্যাম ও ট্রিস্টান স্টাবস। ব্রিটজকি ছাড়াও উইকেটরক্ষক-ব্যাটার হিসেবে ডাক পেয়েছেন রায়ান রিকেলটন ও কাইল ভেরেইনা।

এদিনই চূড়ান্ত হয়েছে বাংলাদেশের মাটিতে প্রোটিয়াদের দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের সূচি। আগামী ২১ অক্টোবর প্রথম টেস্ট শুরু হবে ঢাকার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে। এরপর ২৯ অক্টোবর চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে গড়াবে দ্বিতীয় টেস্ট। প্রায় তিন সপ্তাহের সফরে দক্ষিণ আফ্রিকা দল বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে আগামী ১৬ অক্টোবর। সিরিজ শেষে তারা দেশে ফিরে যাবে ৩ অক্টোবর।

সবশেষ ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সফরে এসেছিল প্রোটিয়ারা। সেবার খেলা হয়েছিল তিন সংস্করণেই। দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছিল সফরকারীরা। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে টাইগাররা পেয়েছিল ২-১ ব্যবধানে ঐতিহাসিক জয়ের স্বাদ। এরপর দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ড্র হয়েছিল মূলত বৃষ্টির কারণে।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এখন পর্যন্ত মোট ১৪ টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। তাদের অর্জন কেবল বিরূপ আবহাওয়ার কল্যাণে পাওয়া ওই দুটি ড্র। বাকি সব টেস্টেই হেরেছে তারা।

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চলমান চক্রের পয়েন্ট তালিকায় বাংলাদেশ আছে পাঁচ নম্বরে। সাত ম্যাচ খেলে তিন জয় ও চার হারে তাদের অর্জন ৩৩ পয়েন্ট। টাইগারদের ঠিক পেছনে অবস্থান করছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তারা ছয় ম্যাচ খেলে দুই জয়, তিন হার ও এক ড্রয়ে পেয়েছে ২৮ পয়েন্ট।

দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট স্কোয়াড: টেম্বা বাভুমা (অধিনায়ক), ডেভিড বেডিংহ্যাম, ম্যাথু ব্রিটজকি, নান্দ্রে বার্গার, টনি ডি জর্জি, কেশব মহারাজ, এইডেন মার্করাম, ভিয়ান মুল্ডার, সেনুরান মুতুসামি, ডেন প্যাটারসন, ডেন পিট, কাগিসো রাবাদা, ট্রিস্টান স্টাবস, রায়ান রিকেলটন, কাইল ভেরেইনা।

প্রযুক্তি ও স্টার্টআপ
জাকারবার্গের সফলতার গল্প

বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক। এর প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। তার পুরো নাম মার্ক এলিয়ট জাকারবার্গ। মাত্র ২০ বছর বয়সে ফেসবুক তৈরি করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিলেন তিনি। তার এই সফলতার স্বপ্ন বুনেছিলেন ছোট থেকেই।

মার্ক জাকারবার্গের জন্ম-পরিচয়

১৯৮৪ সালের ১৪ মে নিউইয়র্কের হোয়াইট প্লেইন শহরে জন্ম নেন মার্ক জাকারবার্গ। তার মা ছিলেন মনোচিকিৎসক আর বাবা ছিলেন দন্তচিকিৎসক।

মার্ক জাকারবার্গের লেখাপড়া
ছোট থেকেই প্রযুক্তি আর সাহিত্যতে বেশ আগ্রহী ছিলেন জাকারবার্গ। আর্ডসেলি হাই স্কুলে গ্রিক এবং ল্যাটিন ভাষায় পারদর্শী হয়ে ওঠেন তিনি। পাশাপাশি বিজ্ঞান এবং ক্লাসিক্যাল শিক্ষায় পুরস্কৃত হন। অসি ক্রীড়া তারকাও ছিলেন মার্ক।

কলেজে পড়াকালে তিনি মহাকাব্যিক কবিতার লাইন থেকে আবৃত্তি করার জন্য পরিচিত ছিলেন।

পরে ক্লাসিক সাহিত্যে বিশেষ ডিপ্লোমাও অর্জন করেছিলেন। তবে সেখানেই থেমে থাকেননি মার্ক। বরাবরই ঝোঁক ছিল কম্পিউটারের প্রতি। সেই ঝোঁক থেকেই বিশ্বের অন্যতম নামকরা প্রতিষ্ঠান হার্ভার্ডে ভর্তি হন কম্পিউটার সায়েন্সে। সেখানেও তিনি অল্প সময়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। তবে একজন ভালো ছাত্র হিসেবে নয়, একজন প্রোগ্রামার হিসেবে।

তার কাছে যে কোনো সফটওয়্যার তৈরি ছিল যেন বাঁ হাতের খেলা।

প্রোগ্রামিংয়ে তার আগ্রহ ছিল স্কুলজীবন থেকেই। মার্কের বয়স যখন প্রায় ১২ বছর, তখন তিনি অ্যাটারি বেসিক ব্যবহার করে মেসেজিং প্রোগ্রাম তৈরি করেছিলেন। মার্ক যার নাম দিয়েছিলেন ‘জুকনেট’। যা দিয়ে পরিবারের সঙ্গে ভাব বিনিময়ের জন্যেও ব্যবহার করতেন।

মার্কের কম্পিউটারের প্রতি আগ্রহ দেখে তার বাবা-মা একজন ব্যক্তিগত কম্পিউটার শিক্ষক রাখেন। ডেভিড নিউমা নামের সেই শিক্ষক বাড়িতে এসে সপ্তাহে এক দিন মার্ককে কম্পিউটার শেখাতেন। মার্ক তার উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে থাকতে একটি এমপি থ্রি মিডিয়া প্লেয়ারও তৈরি করেছিলেন।
জাকারবার্গের পরিবার
জাকারবার্গের স্ত্রীর নাম প্রিসিলা চ্যান। ২০১২ সালে তাদের বিয়ে হয়। তাদের দুটি কন্যাসন্তান আছে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে জাকারবার্গের প্রথম সন্তান মাক্সিমা চ্যান জাকারবার্গের জন্ম হয়। ২০১৭ সালের আগস্টে জন্ম হয় দ্বিতীয় সন্তানের। তার নাম রাখা হয় আগস্ট। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে জাকারবার্গ তার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কথা ঘোষণা দিয়েছিলেন।

মার্ক জাকারবার্গ যেভাবে ফেসবুক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন
২০০৩ সালের ২৮ অক্টোবর জাকারবার্গ ফেসম্যাশ ডটকম নামে একটি ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আর ওই সাইটের জন্য নিজের কলেজের ডেটাবেজও হ্যাক করেছিলেন তিনি। পরে অবশ্য কলেজের শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে এই সাইট বন্ধ করতে বাধ্য হন জাকারবার্গ।

মূলত ওই ফেসম্যাশ ওয়েবসাইট থেকেই ফেসবুকের চিন্তা মাথায় আসে জাকারবার্গের। এরপর ২০০৪ সালে তার রুমমেট ও কম্পিউটারবিজ্ঞান বিষয়ের ছাত্র এডওয়ার্ডো সেভারিন, ডাস্টিন মস্কোভিত্স এবং ক্রিস হিউজেসের সাহায্য নিয়ে ফেসবুক নির্মাণ করেন।

মার্ক জাকারবার্গ যখন ‘দ্য ফেসবুক’ নামে নতুন সাইটটি চালু করেন তার পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ১ হাজার ২০০ জন শিক্ষার্থী এতে রেজিস্ট্রেশন করেন। প্রথমদিকে এটি শুধু হার্ভার্ড কলেজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলেও দুই মাসের মাথায় আরও এটি বোস্টন শহরের অন্যান্য কলেজ, আইভি লীগ এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়।
ফেসবুকের বর্তমান অবস্থা
এখন সারা বিশ্বে সক্রিয় ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৩০০ কোটি। যারা মাসে একবার হলেও ফেসবুকে ঢুঁ মারেন। মার্ক জাকারবার্গ এখন মেটার মালিক। যার আওতায় ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপসহ আরও বেশকিছু প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। সবটির মালিকই ৩৮ বছর বয়সী জাকারবার্গ। এক সময় বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় উপরের দিকে থাকলেও এখন তার অবস্থান ১৬তম। ফোর্বস ম্যাগাজিনের তথ্য অনুযায়ী, জাকারবার্গের মোট সম্পদের পরিমাণ ৬৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

শিক্ষা
বাণিজ্য

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে নিয়ে পালিয়েছে মো. সুমন হোসেন (২৬) নামের পুলিশের এক কনস্টেবল। গত চার দিন ধরে তাদের কোনো খোঁজ না পাওয়া বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় স্কুল ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন।

ঘটনাটি গত সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার রায়পুর গ্রামের ঘটে।

সুমন হোসেন জীবননগর থানার রায়পুর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন। সে যশোর সদর উপজেলার জগতনাথপুর গ্রামের ইউনুস খানের ছেলে।

ওই স্কুল শিক্ষার্থীর বাবা জানান, কনস্টেবল সুমন হোসেন রায়পুর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত থাকা অবস্থায় আমার স্কুল পড়ুয়া কন্যার সঙ্গে প্রেম ভালোবাসা সম্পর্ক গড়ে তোলে। সুমন হোসেনের বাড়িতে স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও আমার মেয়ের কাছে অবিবাহিত বলে সে সম্পর্কে করে। ঘটনাটি আমরা জানতে পেরে জীবননগর থানায় অভিযোগ করি। অভিযোগের পর তাকে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ লাইনে নেওয়া হয়। সেখান থেকে আবার জামজামি পুলিশ ফাঁড়িতে বদলি হয়।

তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে তাকে আবার র‌্যাবে বদলি করা হলে সে সেখানে যোগদান না করে, গত সোমবার সকাল ১০টার দিকে রাস্তা থেকে ফুসলিয়ে আমার মেয়েকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। ঘটনার পর সম্মানের কথা চিন্তা করে বিষয়টি আমরা গোপনে নিষ্পত্তির চেষ্টা করি। কিন্তু পুলিশ কনস্টেবল সুমনের বাড়িতেও তাদের কোনো খোঁজ না পেয়ে অনেকটা বাধ্য হয়েই ঘটনার চার দিন পর মামলা দিতে হয়েছে।

রায়পুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা শরিফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাটি নাবালিকা স্কুলছাত্রীর সঙ্গে হওয়ায় পারিবারিকভাবে গোপনে নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হয়। কিন্তু পুলিশ কনস্টেবল সুমন হোসেন ও স্কুল ছাত্রীর কোনো সন্ধান না পাওয়ায় স্কুল ছাত্রীর বাবা সুমনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল সুমন হোসেনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

জীবননগর থানার ওসি এসএম জাবীদ হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘটনার পর কয়েক দিন ধরে ভিকটিমের পরিবারের লোকজন খোঁজাখুজি করেও তাদের কোনো সন্ধান না পাওয়ায় ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে থানায় লিখিত মামলা দিয়েছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এক সমুদ্র বন্দর থেকে দুর্নীতির অভিযোগে চাকুরীচ্যুত হওয়ার পরেও অলৌকিকভাবে অন্য সুমুদ্র বন্দরে চাকুরীতে বহাল রয়েছেন পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ নাছির উদ্দিন।

দুর্নীতি অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি আয় করেছেন তিনি। ফ্লাট প্লট সহ রাজধানীতে গড়েছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকে মামলা চলমান থাকলেও তার দুর্নীতির ঘোড়া ছুটে চলছে বীরদর্পে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, প্রকৌশলী নাছির উদ্দীন প্রথমে চট্টগ্রাম বন্দরে কাজ শুরু করেন। কিছু দিন যেতে না যেতেই তিনি বিভিন্ন অনিয়ম এবং দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পরেন। বিষয়টি বন্দর কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে তার বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতির দায়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলা করেন এবং পরবর্তীতে চাকরিচ্যুত হন তিনি। যে মামলা বর্তমানেও চলমান রয়েছে।

সুত্র আরও জানায়, নাসির উদ্দিন কোটি টাকা ঘুষের বিনিময়ে পায়রা বন্দরে আবারও চাকরি পেয়ে যান। চট্টগ্রাম বন্দরের সবকিছু ভুলে তিনি তার দুর্নীতির ঘোড়াকে ছুটিয়ে চলছেন বর্তমান কর্মস্থলে। আর এসব দুর্নীতি অনিয়মের মাধ্যমে আয় বহির্ভূত সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তিনি।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে জানান, কয়লা ধুইলেও ময়লা যায় না। নাসির উদ্দিন যেখানেই যাবেন সেখানেই তার নিজস্ব দুর্নীতির সিন্ডিকেটে গড়ে তুলবেন। তিনি কিভাবে যে আবারও চাকুরীতে বহাল হলেন সেটা ভেবে পাচ্ছিনা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রকৌশলী নাছির উদ্দীন পায়রা বন্দরে যোগদানের পর চাকরি হারানোর ভয়ে কিছু দিন ভালোই ছিলেন বলেন। পরবর্তীতে আবারও শুরু হয় তার  স্বভাবসুলভ কর্মকান্ড। যা ছাড়িয়ে যান চট্টগ্রাম বন্দরের সকল দুর্নীতির ইতিহাসকেও।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা বলেন, নাসির উদ্দিনের কারণে কাজ করতে পারছি না আমরা। তিনি দুর্নীতির এক গডফাদার। দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি যে সম্পদ গড়ে তুলেছে তাই দেশের অনেক মন্ত্রী এমপিদেরও নেই। রাজধানী ঢাকার মহাখালী ডিওএইচএস এলাকায় নাসির উদ্দিনের ৫ কোটি টাকা মূল্যের একটি রাজকীয় ফ্ল্যাট রয়েছে এবং এই সম্পত্তি নিয়ে দুদকের একটি মামলা চলমান রয়েছে।

সূত্র জানায়, প্রকৌশলী নাছির উদ্দীনের স্ত্রী এবং তার পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের নামে বিভিন্ন স্থানে রয়েছে নামে বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। ধানমন্ডি এবং শ্যামলীতে রয়েছে আট তলা বিশিষ্ট ২টি ভবন। দূর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে আয় বহির্ভূত অবৈধ অর্থ মূলত তিনি তার আপন ভায়রার মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন।

এছাড়াও নিয়োগ বাণিজ্য করে অস্বাভাবিক সম্পদের মালিক হয়েছেন প্রকৌশলী নাছির উদ্দীন। নিজের এলাকা নোয়াখালীতে টাকার বিনিময়ে অনেক লোকের চাকরি দিয়েছেন। এ জন্য জন প্রতি তিনি ১০-১৫ লক্ষ টাকার নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব নিয়োগ বাণিজ্য নোয়াখালী থেকেই শত কোটি টাকার অর্থ উপার্জন করেছেন প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন।

 

মানুষকে বলা হয় “আশরাফুল মাখলুকাত” বা সৃষ্টির সেবা জীব। মহান আল্লাহ্ তাআলা মানুষকে সৃষ্টির সেরা হিসেবে মনোনীত করেছেন। মানুষের আছে মনুষ্যত্ব, জ্ঞান-বৃদ্ধি, বিবেক-বিচেনা, এগুলো দিয়ে একজন মানুষ ভালো-মন্দ বিচার করেন। যার মনুষ্যত্ব নাই, সে মানুষরূপী অমানুষ। অমানুষ কখনো ভালো-মন্দ বিচার করতে পারে না। যেমন, বনের জন্তু। আমরা মাঝে মধ্যেই জন্তুর প্রতিচ্ছবি মানুষরূপী অমানুষের আচরণ ও কার্যকলাপে দেখতে পাই। সম্প্রতি দেশবাসী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আর্শীবাদে জন্তুর প্রতিচ্ছবি দেখতে পান প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের কয়েকজন শিক্ষার্থীর মাঝে। যা দেখে বিবেকবান মানুষ হতাবাক হয়েছে। যারা মোটেও হতবাক হননি, তারা বিবেকহীন মানুষ। বিবেকহীন মানুষ মৃত মানুষের সমতুল্য।

স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক বরগুনার পাথরঘাটার সন্তান তোফাজ্জল। এলাকায় তিনি অত্যন্ত সজ্জন, পরিচ্ছন্ন ও বিনয়ী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। মৃত্যুর আট বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় বাবাকে হারান। চার বছর আগে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মা মারা যান। গত বছর পনেরো রোজায় লিভার ক্যান্সারে মারা যান বড় ভাই। চোখের সামনে বাবা, মা ও বড় ভাইয়ের মৃত্যুতে তোফাজ্জল মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। সেই থেকে শুরু হয় তার ভবঘুরে জীবন। তোফাজ্জলকে মাঝে মধ্যে পাথরঘাটা দেখা গেলেও অধিকাংশ সময় তিনি লাপাত্তা থাকতেন। পাথরঘাটার অনেকে তোফাজ্জলকে উদ্যোম শরীরে, কখনো নোংরা পোষাকে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে ঘুড়াঘুড়ি করতে দেখেছেন। এমন একজন মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করলো ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের বিবেকহীন কয়েক শিক্ষার্থী। তোফাজ্জলের অপরাধ তিনি সন্দেহভাজন একজন মোবাইল চোর। আরও অপরাধ পাগল হলেও ফোন নম্বর মনে রাখতে পারা। তার চেয়েও বড় অপরাধ, ক্যান্টিনের খাবারের মান ভালো বলা। মৃত্যুর আগে মানুষের হয়তো খাবারের স্বাদ অমৃত লাগে। এই খাবার জীবনের শেষ খাওয়া হবে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন কিনা জানি না। খাবার হজমও করতে পারলেন না, তার আগেই মারধর করে হত্যা করলেন ফজলুল হক মুসলিম হলের কয়েকজন ছাত্র। ইতিহাসের পাতায় ফজলুল হক মুসলিম হলের ছাত্রদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তোফাজ্জলকে হত্যার কারণে নয়, বরং তাদের উদার মানবিকতায়। তোফাজ্জলকে হত্যার আগে শেষ বারের মতো ভাত ও পানি খেতে দিয়েছিলেন।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করেন বুয়েট ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী। আবরারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ, তিনি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের পানি ও গ্যাস চুক্তির বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। এই অপরাধে আবরারকে সাত-আটজন ছাত্রলীগ নেতা শেরেবাংলা হলের একটি কক্ষে ক্রিকেট স্টাম্প আর স্কিপিং রোপ দিয়ে দফায় দফায় বেধড়ক পিটিয়ে হত্যা করে। আবরারকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যার খবরে ব্যথিত হয় বাংলাদেশের মানুষ।

চব্বিশ বছরের যুবক বিশ^জিৎ ছিলেন দর্জি দোকানের কর্মচারী। বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মশুরা গ্রাম। ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর। প্রতিদিনের মত রাজধানীর লক্ষ্মীবাজারের বাসা থেকে শাঁখারী বাজারের কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন বিশ্বজিৎ। তৎকালীন সরকারের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে বিএনপির কর্মসূচি চলাকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিশ^জিৎ পৌঁছামাত্র একটি ককটেল বিস্ফোরণ হয়। আতঙ্কে অন্যান্য পথচারীদের মত নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য দৌড়ে পালাচ্ছিলেন বিশ্বজিৎও। কিন্তু রক্ষা পেলেন না। বিরোধী দলের কর্মী সন্দেহে বিশ^জিৎকে বন্য প্রাণী শিকারের মতো ধাওয়া করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০-১২জন ছাত্রলীগ কর্মী। হত্যাকারীরা রাজপথে, প্রকাশ্য দিবালোকে সাংবাদিক, মানুষ আর ক্যামেরার সামনে বিশ্বজিৎকে কুপিয়ে ও বেদম প্রহার করে নৃশংসভাবে হত্যা করে। বিশ^জিৎকে হত্যার পর হত্যাকারীরা সেদিন আনন্দ মিছিলও করেছিল। তাদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা ছিল না। হত্যার নির্দয় দৃশ্য দেখে মানুষ হতবাক হয়ে গিয়েছিল। পত্রিকা, টেলিভিশনে বিশ্বজিৎ এর হত্যাকারী মানুষরূপী হায়েনাদের ছবি সেদিনও দেশের মানুষ দেখেছিল।

তোফাজ্জল, আবরার ও বিশ্বজিৎ হত্যাকারীরা প্রত্যেকেই দেশের ঐতিহ্যবাহী তিনটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র। বিশ^বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র হয়েও তাদের মধ্যে কোনো মনুষ্যত্ব ছিল না। কেনো মানুষরূপী ওই ছাত্রগুলো অমানুষ হলো। এই প্রশ্ন দেশের সর্বস্তরের মানুষের মনে। এ দায় শুধুই কি হত্যাকারী শিক্ষার্থীদের? সরকার

রাজধানীর শাহবাগ থানা এলাকা থেকে চার কেজি গাঁজাসহ একজন নারী মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের শাহবাগ থানা পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতের নাম-মোসা: নাসরিন। আজ সোমবার ( ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪) দুপুরে অভিযান চালিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা হতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, নাসরিন দীর্ঘ দিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গাঁজা ও ইয়াবাসহ অন্যান্য অবৈধ মাদকের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল।

গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

রাজধানীর তেজগাঁয়ের পূর্ব তেজতুরী বাজার এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির অফিসে চাঁদাবাজির অভিযোগে মো. জসিম উদ্দিন ওরফে কারেন্ট জসিমকে গ্রেফতার করেছে তেজগাঁও থানা পুলিশ।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)-এর মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে কারওয়ান বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

অভিযোগকারী মোহাম্মদ আবু মুছা ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান খাজা গরীবে নেওয়াজ জেনারেটর অ্যান্ড পাওয়ার ডিস্টিবিউশন সেন্টার ও ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিবিউশন পাওয়ারের (আইডিপি) প্রকল্প পরিচালক পদে কর্মরত। তার প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ চুরি বন্ধে ও সরকারি রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে সরকারের অনুমোদিত মিটারগুলো আইডিপির অনুকূলে সংযোগ নেয়। পরবর্তী সময়ে আইডিপি সংযোগগুলো সঠিকভাবে পরিচালনা করে দৈনন্দিন বিদ্যুৎ বিল আদায় করে সরকারকে পরিশোধ করে।

গত ৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় গ্রেফতার জসিম তার সহযোগিদের নিয়ে আইডিপির তেজগাঁয়ের পূর্ব তেজতুরী বাজারের অফিসে গিয়ে বিদ্যুতের লাইন চালানোর জন্য ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। দাবিকৃত চাঁদা না দিলে প্রতিষ্ঠান ও কর্মরত কর্মচারীদের বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির হুমকি দেন। এছাড়াও জসিম আইডিপির নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ গ্রহণকারী ভোক্তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ২০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছে।

তিনি বলেন, এ সংক্রান্তে ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আবু মুছার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তেজগাঁও থানায় একটি মামলা রুজু হয়। পরে জসিম উদ্দিন ওরফে কারেন্ট জসিমকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। গ্রেফতার জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

ঋণ প্রদানে অনিয়ম-দুর্নীতি ও গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ উঠেছে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক নাটোর শাখা ব্যাবস্থাপকের বিরুদ্ধে। শাখা ব্যবস্থাপক মো: হাফিজুর রহমানের অনিয়ম দুর্নীতি আর ঋণ গ্রহণে হয়রানিতে অতিষ্ঠ নাটোরের একাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।

গ্রাহকদের অভিযোগ, যথাযথ দলিলাদি না থাকার পরও ঋণ দেয়ার একাধিক নজির রয়েছে । অথচ ঘুষ না দেওয়ায় বৈধ কাগজপত্র থাকার পরও ঋণ পাচ্ছেন না প্রকৃত ব্যবসায়ীরা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক নাটোর শাখা ব্যাবস্থাপক মো: হাফিজুর রহমান এই শাখায় যোগ দেওয়ার পর থেকেই অনিয়ম-দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্য শুরু করেন। বৈধ কাগজপত্র থাকলেও ঘুষ না দিলে গ্রাহকদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করেন। এতে অতিষ্ঠ হয়ে অনেক গ্রাহক ওই ব্যাংক থেকে ঋণ না নিয়ে অন্য ব্যাংকের দ্বারস্থ হয়েছেন।

ব্যবস্থাপকের হয়রানি অব্যাহত থাকায় ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহিতা ও ‌আবেদনকারী অনেক গ্রাহক ব্যাংকটির উর্দ্ধতন বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।

বৈধ কাগজ পত্র থাকার পরও বিগত ছয়মাস ধরে চেষ্টা করেও ঋণ পাননি নাটোর শহরের ব্যবসায়ী শওকত আলী। ব্যবস্থাপকের হয়রানিতে অতিষ্ঠ হয়ে চলতি মাসে অন্য ব্যাংকে ঋণ নিয়েছে তিনি।

তিনি বলেন, তিন হাজার সেটের ব্রয়লার খামার এবং প্রশিক্ষণ সনদ থাকা সত্ত্বেও ঘুষের টাকা না দেওয়ায় ঋণ পাননি তিনি।

শওকত আলী বলেন, ‘আমার ২৮ লাখ টাকা মূল্যের ১৪ গণ্ডা জমি এবং ১২ কানি জমির দলিল জমা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও ২ লাখ টাকা ঋণ পাইনি। অথচ আমার সামনেই ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে একাধিক গ্রাহককে ঋণ দিয়েছেন তিনি। ’

ব্যবস্থাপকের দাবি অনুযায়ী ১০ হাজার টাকা ঘুষ না দেওয়ায় উপযুক্ত দলিল থাকার পরও ঋণ পাননি বলে অভিযোগ তার।

ঘুষ কম তাই কমলো ঋণ:
এই প্রতিবেবেদককে হয়রানি, ঘুষ গ্রহণ ও স্ট্যাম্পের অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ দেন হেফাজুর রহমান।

বৈধ কাগজপত্র জমা দেওয়ার পরও তিন মাস আবেদন ফরম দেয়নি উল্লেখ করে বলেন, ব্যাংকের একটি বৈঠকে উপস্থিত ৬জনের দুপুরের খাবারের বিল পরিশোধ করতে বলেন মো: হাফিজুর রহমান। এরপর তার কাছ থেকে আরো ২ হাজার টাকা ঘুষ আদায় করা হয়। দাবিকৃত ঘুষ দিতে না পারলে ঋণ কম দেবার হুমকি দেন।

‍অভিযোগের বিষয়ে মো: হাফিজুর রহমানকে একধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেন নি।

রাজধানীর নিকুঞ্জ এলাকায় ‘ছিনতাইকারীর’ ছুরিকাঘাতে মুনতাকিম আলিফ (২৭) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দিবাগত রাতে খিলক্ষেত থানা পুলিশ সত্যতা নিশ্চিত করেছে।

আলিফ ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। স্নাতক শেষ করার আগেই তিনি নিকুঞ্জ এলাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে খণ্ডকালীন চাকরি শুরু করেছিলেন।

আলিফের বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ে। তার বাবার নাম জুলফিকার আলী। ঢাকায় তিনি কাওলা এলাকায় থাকতেন।

পুলিশ আরও জানায়, নাইট শিফটের কাজ শেষ করে আজ সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আলিফ ও তার এক সহকর্মী অফিস থেকে বের হন। তারা নিকুঞ্জ-১ থেকে ফ্লাইওভারের কাছে যাওয়ার পর ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন। আলিফের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে ছিনতাইকারীরা আলিফের বুকে ছুরিকাঘাত করে। তাকে উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে নেওয়ার হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

এই ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ এখনো হাতে পাওয়া যায়নি। অপরাধীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে, জানায় পুলিশ।

বাংলাদেশের স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরীর দখলে রয়েছে দেশের চব্বিশটি স্থল বন্দর। শ্বশুরের প্রভাব খাটিয়ে গত বছরের জুলাই মাসে বাংলাদেশ স্থল বন্দর এর চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন মো: জিল্লুর রহমান চৌধুরী।

চেয়ারে বসেই শুরু করেন অনিয়ম-দুর্নীতি আর নিয়োগ বাণিজ্য। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই ৫ একর জমিতে গড়ে তুলেন আলিশান বাড়ি। মালিক হয়ে যান একাধিক বিলাসী গাড়ি। শ্বশুরবাড়ি এলাকায় লালমনিরহাটে স্ত্রীর নামে একশত একর জমি কেনেন জিল্লুর রহমান। দুর্নীতির টাকায় এলাকায় সমাজ সেবা করে বেড়ান জিল্লুর রহমান। একাধিক মসজিদ-মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠান খুলে সেখানে অবৈধ আয় এর দোকান খুলে বসেছেন তিনি।

আট থেকে দশ জন শিশুকে এতিম দেখিয়ে সরকারি-বেসরকারি অর্থ হাতানো শুরু করেন জিল্লুর রহমান। তার অবৈধ আয় এর অন্যতম খাত নিয়োগ-বাণিজ্য,বড় বড় প্রকল্পে নিম্নমানের কাজ,টেন্ডার বাজি । আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে শত শত নিয়োগ দিতে থাকেন জিল্লুর রহমান। যাতে জনপ্রতি ২ থেকে ৫ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

আর তার এই সব কাজের সহায়তা করেন তারই প্রতিষ্ঠানের প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার হাসান আল। শতশত কোটি টাকা তার মাধ্যমেই নিয়ে থাকেন তিন।

অন্য দিকে নিজ প্রতিষ্ঠান স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষে স্বজনদের নিয়োগ দিয়ে প্রতিষ্ঠানকে পারিবারিক কেন্দ্র বানিয়ে ফেলার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। গত দুই মাসের মধ্যে স্থল বন্দরে নিজ পরিবারে মধ্যে যাদের চাকরি দিয়েছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

(১) আবু রায়হান চৌধুরী, সহকারী পরিচালক (ট্র্যাফিক), আপন বড় ভাইয়ের ছেলে।

(২) সামিয়া আক্তার নীলা, ফায়ার হাইড্রেন অপারেটর, আপন বোনের মেয়ে।

(৩) তানভির আহমদ,ফায়ার হাউজ ড্রাইভার,আপন মেজ ভাইয়ের ছেলে।

(৪) মো. আতাউর,পাওয়ার হাউজ ড্রাইভার, আপন বড় ভাই নাতি.

(৫) মোহাম্মদ শরীফ মোল্লা, কার ড্রাইভার, আপন বোনের পালিত ছেলে।এছাড়াও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার নেতৃত্বদানকারী ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ নেত্রী ফাতেমা খাতুন লাভলীকে চলতি মাসের ১ তারিখে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দেন। এই নেত্রী ৩রা আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে গণভবনে সাক্ষাৎকারের ছবি প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।

বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের বর্তমান চেয়ারম্যান মো: জিল্লুর রহমান চৌধুরী স্থলবন্দরে একটি গাড়ি পেলেও তিনি তার দখলে রাখেন তিনটি গাড়ি।  এছাড়াও একের পর এক ভৌতিক প্রকল্প দিয়ে কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন তিনি। জিল্লুর রহমানের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলতে গিয়ে বন্দরের অনেককে দিতে হয়েছে মাশুল।

বদলি,কারণ দর্শানোর নোটিশ, বিভাগীয় ব্যবস্থার মত শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে। তার দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতা অপব্যবহার সংক্রান্ত বিভিন্ন মহলে একাধিকবার অভিযোগ দেওয়া হলেও স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ এর জামাতা হওয়ায় সরকার কোন ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে বহাল তবিয়তে রেখেছেন।

ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের ৩ হাজার ৪শত কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পসহ ১০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নে মন্ত্রীর স্বেচ্ছাচারিতায় জিল্লুর রহমানকে স্থলবন্দরের চেয়ারম্যান পদে পদায়ন করা হয়। তিনি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর নিজ ক্ষমতায় ভাটা লাগতে পারে সেজন্য ৮ই আগস্ট তড়িঘড়ি করে আরো কিছু নিয়োগ-বাণিজ্য করেন।

এছাড়াও গত ৫আগস্ট সরকার পতনের দু-দিন পর রাজধানীর ইস্কাটনে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরীর সরকারি বাসায় সপরিবারে তার শ্বশুর সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ আত্মগোপনে ছিলেন। পরিস্থিতি কিছুটা ঠান্ডা হলে গত সোমবার দুপুর ১২টার দিকে তার শ্বশুর লালমনিরহাট-২ আসনের এমপি সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের ন্যাম ভবনের বাসার মালামাল আনতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে আটক হয় মালামাল সহ স্থলবন্দরের দুটি গাড়ি। উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সদর দপ্তর থেকে আরেকটি মাইক্রোবাস যোগে বন্দরের কতিপয় নিরাপত্তাকর্মী গিয়ে শিক্ষার্থীদের হাত থেকে চেয়ারম্যান ও সরকারি গাড়ি উদ্ধার করে নিয়ে আসে।

যদিও অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে জিল্লুর রহমান বলেন।তবে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সদর দপ্তরের গাড়িচালক মাজেদুর রহমান লিটন বলেন, সোমবার দুপুরে স্যারের (জিল্লুর রহমান) গাড়িটি ন্যাম ভবনে আটকে দেন শিক্ষার্থীরা। পরে স্যারদের সহায়তায় আরেক সহকর্মীকে নিয়ে ন্যাম ভবন থেকে গাড়িটি উদ্ধার করে নিয়ে আসি।

জিল্লুর রহমান তার শ্বশুরের মালামাল নামাতে ব্যবহার করেন স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সদর দপ্তরের নিরাপত্তারক্ষী অপুসহ কয়েকজনকে। অপু বলেন, স্যাররা বলেছেন, তাই গেছি। বেশিক্ষণ ছিলাম না। লিফটের ৯ তলায় স্যারের শ্বশুরের কিছু মাল নামিয়েছিলাম।

কিন্তু শিক্ষার্থী ও ন্যাম ভবনের স্যাররা নিষেধ করায় ১২ টার দিকে রেখে চলে আসছি। এদিকে তার শশুররে নেম ভবনের ফ্ল্যাট হতে মূল্যবান গহনা, বস্তা ভর্তি টাকা ও মূল্যবান দ্রব্যাদি ইস্কাটন রোডের ১ নম্বর গেইটের রজনীগন্ধা ভবনের ৫ তলায় তার নির্ধারিত সরকারি ফ্লাটে নিজ হেফাজতে সরিয়ে রাখার অভিযোগও রয়েছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী, গ্রেট-১(পরিচিতি নং-৬১০৩) এর বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ দাখিল করা হলেও তিনি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এতই প্রভাবশালী ছিলেন যে অভিযোগটি দুদক আমলে নিয়ে অনুসন্ধানের সাহসও পর্যন্ত পায়নি।

এই অভিযোগ গুলোর ব্যাপারে জানার জন্য বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরীর ফোনে কল করেও তাকে পাওয়া যায় নাই।

 

জীবনযাপন
সাহিত্য

এনআইডির তথ্য ফাঁস ও বিক্রির অভিযোগে জয়-পলকসহ ১৯ জনের নামে মামলা

‘র’ এর এজেন্ট গ্রেপ্তার

রাষ্ট্র সংস্কারে জামায়াতের ১০ প্রস্তাব

৩ অতিরিক্ত আইজিপিকে বাধ্যতামূলক অবসর

রাজবাড়ীতে দুর্গাপূজা মণ্ডপের প্রতিমা ভাঙচুর

‘পূজামণ্ডপের এক কিলোমিটারের মধ্যে পাগল ঢুকতে দেওয়া যাবে না’

৩ বছর ধরে নিখোঁজ, প্রেমিকের বাড়িতে খোঁজ মিলল ‘মৃত’ নারীর

টানা তিনবছর ধরে নিখোঁজ। সকলের ধারণা ছিল, ওই নারীকে হত্যা করা হয়েছে। শ্বশুরবাড়ি ও বাবার বাড়ির পক্ষ থেকে একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করা হয়েছিল। অবশেষে সম্প্রতি খোঁজ মিলল ওই নারীর।

বাড়ি থেকে কয়েকশো কিলোমিটার দূরে প্রেমিকের বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকের কল্যাণে তাকে খুঁজে বের করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিন বছর ধরে মৃত বলে মনে করা উত্তরপ্রদেশের গোন্ডার ৩০ বছর বয়সী এক নারীকে গত রোববার গভীর রাতে লখনৌতে জীবিত পাওয়া গেছে। ওই নারীর নাম কবিতা এবং তিনি ২০২১ সালে হঠাৎ করেই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। এই তিন বছরে তার পরিবার তার শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে হত্যার মামলা দায়ের করেছে।

আবার তার স্বামী তার বাবার বাড়ির বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা দায়ের করেছে। কিন্তু, তিন বছরে কোথাও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। ধরেই নেওয়া হয়েছিল, তার মৃত্যু হয়েছে। তবে এতদিনে তার সন্ধান পেয়েছে উত্তর প্রদেশ পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, লখনৌতে খোঁজ পাওয়া গেছে ওই নারীর। গত তিন বছর ধরে সেখানে তিনি তার প্রেমিকের সঙ্গে বসবাস করছেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ২০১৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর দুয়া বাজার এলাকার বিনয় কুমারকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। এরপর ২০২১ সালের ৫ মে হঠাৎ করেই শ্বশুরবাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।

কবিতার বাপের বাড়ির লোকজন, তার শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনে। তার স্বামী, দেবর এবং শাশুড়ির বিরুদ্ধে কোতোয়ালি নগর থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

অন্যদিকে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে কবিতার ভাই অখিলেশ-সহ তার বাপের বাড়ির ছয়জনের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেছিলেন কবিতার স্বামী বিনয় কুমার। তিনি অভিযোগ করেন, বাপের বাড়ির লোকজনই কবিতাকে অপহরণ করেছে।

দুই মামলারই তদন্ত চলছিল। কিন্তু কবিতার কোনও খোঁজ মেলেনি। বিষয়টি হাইকোর্টে পর্যন্ত গড়ায়। হাইকোর্ট জানতে চায় পুলিশ কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে। এরপর, উত্তর প্রদেশ পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ এবং কোতোয়ালি থানার পুলিশ যৌথভাবে এই মামলার তদন্ত শুরু করে। অবশেষে সম্প্রতি কবিতা ও তার প্রেমিক সত্য নারায়ণ গুপ্তর খোঁজ পায় তদন্তরকারীরা। লখনৌয়ের ডালিগঞ্জ এলাকায় একটি বাড়িতে গত তিন বছর ধরে বাস করছিলেন তারা।

গোন্ডার পুলিশ সুপার (এসপি) বিনীত জয়সওয়াল বলেছেন, “গোন্ডার দুর্জনপুর বাজারে সত্য নারায়ণের একটি দোকান ছিল। কবিতা প্রায়শই সেই দোকানে যেতেন। ক্রমে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। এরপর, তারা দুজনে একসঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন।”

জিজ্ঞাসাবাদের সময় কবিতা জানিয়েছেন, লখনৌয়ে আসার আগে এক বছর ধরে তিনি এবং সত্য নারায়ণ অযোধ্যায় থাকতেন। পুলিশ জানিয়েছে, কবিতার মেডিকেল পরীক্ষা করা হচ্ছে। তাকে শিগগিরই আদালতে পেশ করা হবে। আদালতের নির্দেশ অনুসারে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে তাকে খুঁজে বের করে গোন্ডায় আনার পর সাংবাদিকদের কবিতা বলেন, “আমি যেখানে ছিলাম সেখানেই থাকতে চাই। আমি আমার পরিবারের সাথে দেখা করতে চাই না; তারা আমাকে বিরক্ত করেছে।”

চলচ্চিত্র অনুদানের নতুন কমিটিতে থাকছেন যারা

সরকারি অনুদান দেয়ার জন্য স্বচ্ছতা ও সর্বোচ্চ পেশাদারত্বের সঙ্গে চলচ্চিত্র বাছাইয়ের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামকে সভাপতি করে মোট ১০ জন সদস্যকে নিয়ে এ কমিটি গঠন করা হয়।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিস বিভাগের শিক্ষক, অভিনেতা ও নির্দেশক ড. আবুল বাশার মো. জিয়াউল হক (তিতাস জিয়া), চলচ্চিত্র নির্মাতা ও প্রযোজক খান শারফুদ্দীন মোহাম্মদ আকরাম (আকরাম খান), চলচ্চিত্র নির্মাতা ও চিত্রনাট্যকার নার্গিস আখতার, রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি আহমেদ মুজতবা জামাল, নির্মাতা ও সম্পাদক সামির আহমেদ, অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম।

প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়, চলচ্চিত্র শিল্পে মেধা ও সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করা এবং বাংলাদেশের আবহমান সংস্কৃতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি অনুদান প্রদান নীতিমালা-২০২০ (সংশোধিত)’ অনুযায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সরকারি অনুদান প্রদানের লক্ষ্যে প্রাপ্ত প্যাকেজ প্রস্তাবগুলো পরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত প্রদানের জন্য সরকার ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদান কমিটি’ পুনর্গঠন করল।