দুদকের জালে আটকা পড়েছেন মোমিন

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এ আলোচনা যেন থামছেই না। একের পর এক থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসছে। একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারি তিনিও গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। এবার দুদকের জালে আটকা পড়েছেন এই মোমিন । বলছি রাজউকের প্রধান কার্যালয়ে কর্মচারি ডাটা এন্ট্রি অপরেটর আব্দুল মোমিন এর কথা।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, রাজউকের এই কর্মচারি ভাদাইল মৌজার হোসেন প্লাজার পূর্বে পাশের দেড় বিঘা জমি কিনে টিনসেড করে ভাড়া দিয়েছেন। যা দিয়ে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা নিচ্ছেন। এছাড়া তিনি (আব্দুল মোমিন) তার স্ত্রী এবং তার নিজ নামে বিভিন্ন ব্যাংকে শতশত কোটি টাকা জমা আছে।

আরো জানা গেছে, মান্ডা মদিনা টাওয়ারে পাশে ৭ তলা ভবন নির্মান করছেন। মতিঝিল জসিম উদ্দিন রোডে ১৮০০ বর্গফিটের ফ্লাট কিনেছেন যার বর্তমান বাজার মূল্য ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

এই বিষয়ে দুদকের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে এ প্রতিবেদককে বলেন, এটি এখনো চলমান আছে। তদন্ত শেষ পর্যায়ে । খুব শিগ্রই তিনি সহ বেশ কয়েকজনের প্রতিবেদন দেয়া হবে। শুধু রাজউকে আব্দুল মমিন সাহেব না। তার মত আরো একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন। যারা অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন। আমরা অচিরেই তাদের ধরবো। একটি কথা মনে রাখবেন সরকারি চাকরি মানে জনগনের সেবক। আর সেই সেবা দেওয়ার নামে যারা নিজেদের সুবিধা নিচ্ছেন দুদক বিন্দু পরিমান ছাড় দিবে না। জনগনকে সেবা দেওয়াই হচ্ছে সরকারি কর্মকর্তা- কর্মচারীদের কাজ।

দুর্নীতি দমন কমিশনের ভাষ্য মতে রাজউকের অন্তত ২৫ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারির বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েকজনকে গ্রেফতার এবং মামলাও দায়ের করা হয়েছে। তারপরও এই প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি কমছে না।

আব্দুল মোমিনের যত কাণ্ড: আব্দুল মোমিনের রাজউকের চাকরি করার কারণে সবার সাথেই একটি ভালো সম্পর্ক হয়েছে। আর সেই সুযোগে কিছু সহজ সরল মানুষদের কাজ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। সম্প্রতি পূর্বাচলে জৈনিক এক ব্যক্তির নিকট থেকে ৭৫ লাখ টাকা নিয়েছেন। ২০২০/২১ সালে নিজের (মোমিন) একাউন্ট থেকে ৪০ লাখ টাকা উঠানো হয়েছে। সেই বছরেই এক এসপি লিখিত অভিযোগ করেন চেয়ারম্যান বরাবর। তিনি অভিযোগে জানান কাজের কথা বলে আব্দুল মমিন ১৫ লাখ টাকা নিয়েছেন। সেটা নিয়ে তদন্ত কমিটি হলে মমিন তদন্ত কমিটির এক কর্মকর্তাকে দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিয়েছেন।

এছাড়া আব্দুল মোমিন কোটি কোটি টাকা বানিয়েছেন স্পা সেন্টার দিয়ে। তিনি প্রথমে “ঢাকা স্পা সেন্টার” নামে গুলশানে একটি স্পা সেন্টার খুলেন। এই স্পা সেন্টারের আড়ালে করতেন যৌন ব্যবসা।

অনুসন্ধান জানা যায়, রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন’র আত্মীয় পরিচয় দিয়ে স্পার আড়ালে ছিল তার পতিতা বাণিজ্য। মাদকসহ নানান রকমের অপরাধে লিপ্ত ছিল এই “ঢাকা স্পা সেন্টার”। বিগত সরকারের সময় পুলিশ অভিযান চালালে তার ব্যাবসায়িক পার্টনার মোহন রায় সহ দশজন ধরা পরে।

পরবর্তীতে আবার গুলশান-১ এর নাভানা টাওয়ারে একটি অ্যাপার্টমেন্টে “ঢাকা বডি কুইন স্পা” নামে ঢাকায় উঠতি বয়সের যুবতী ও নারীদের একত্রিত করে অবৈধ দেহ ব্যবসা পরিচালনা ও যৌন শোষণ ও নিপীড়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে। পরবর্তীতে পার্টনারের সাথে মনমালিন্য হওয়ায় আলাদা হয়ে যান। আলাদা হওয়ার কারণ ছিল বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাকে মোমিন এর কাস্টমার হওয়ায় টাকা বেশি আবদার করতেন। এই কারণে মূলত আলাদা পরবর্তীতে বন্ধ হয়ে যায় প্রতিষ্ঠানটি ।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ডাটা এন্ট্রি অপরেটর আব্দুল মোমিন রাজউকের কাজে ফাঁকি দিয়ে বেশ কয়েকটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাজ নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকেন। এছাড়া অর্থের বিনিময়ে প্ল্যান পাশ, প্লট হস্তান্তর, প্লট বিক্রয়ের দালালী, আবাসিক ভবনকে অ-আবাসিক বা বাণিজ্যে রুপান্তর ইত্যাদি কাজ চুক্তির মাধ্যমে করে যাচ্ছেন। এসব কাজ করে তিনি অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। অফিস টাইমে প্রায় সময়েই তার সাথে কিছু ঠিকাদারের গল্প করতে দেখা যায়। তিনি ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ৭১ ও ৭২ নং ওয়ার্ডের দুইজন প্রভাবশালী নেতার বেশ কয়েকটি বড় বড় প্ল্যান মিথ্যা তথ্যে পাশ করিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জাল কাগজপত্র সৃষ্টি করতে তিনি ওস্তাদ বলে জানিয়েছেন রাজউকের কয়েকজন কর্মচারি।

এভাবে অবৈধপথে অর্থ উপার্জন করে সেই অর্থে তিনি রাজধানীর সবুজবাগ থানাধীন মান্ডা ঝিলপাড়ে স্ত্রী ও শ্বাশুড়ীর নামে ৫ কাঠা জমি ক্রয় করেছেন যার মুল্য কমপক্ষে ১০ কোটি টাকা। ঢাকা -মুগদা ৭১ নং ওয়ার্ডের দক্ষিন মান্ডার ১ম গলিতে “শান্তির নীড়” সুলতানা মহল নামে একটি ৬তলা বাড়ী নির্মাণ করেছেন যার মুল্য আনুমানিক ২৫ কোটি টাকা। নিজে ব্যবহারের জন্য একখানা প্রাইভেট কারও ক্রয় করেছেন যার মুল্য কমপক্ষে ২৮ লাখ টাকা। এছাড়া তার গ্রামের বাড়ী সিরাজগঞ্জেও প্রচুর সম্পত্তি ক্রয় করেছেন। এসব সম্পদের বৈধ কোন ইনকাম সোর্স নেই বলে জানা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)-এর একাধিক কর্মকর্তা জানান, তার নামে (আব্দুল মোমিন) কোন সম্পত্তিই রাখেনা। যা আছে সবকিছুই তার আত্মীয়-স্বজনের নামে রাখেন এটা আমাদের কাছে সব সময়ই বলেন। সরকারি চাকরি করি কখন কি হয় তা তো বলা যায় না। কখন কে আবার ধরে। একই টেবিলে দীর্ঘ ২২ বছর যাবত কাজ করছেন আব্দুল মোমিন। তার বিষয়ে অনেক অভিযোগ থাকলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

এসব অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে আব্দুল মমিনকে পাওয়া যায়নি।

এই বিষয়ে রাজউকের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো: রিয়াজুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে রাজউকের বেশকিছু কর্মচারির মামলা হাইকোর্ট দেখছেন। পাশাপাশি দুদকও খোজ-খবর নিচ্ছেন। আমার মতে কোন অনিয়ম করা ঠিক না। যারা করবে তারা আইনের আওতায় আসবে। আইন তাদের বিচার করবে। যেহেতু এখনো তদন্ত চলছে এর বাহিরে আর কিছু বলা যাবে না।

 

ভারতের সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দেশটির রাজনীতিবিদরা। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যকে অত্যন্ত হতাশাজনক এবং নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন ভারতীয় রাজনীতিবিদ ও কূটনীতিকরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি চীন সফরে গিয়ে এক বক্তৃতায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের ৭টি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যকে (সেভেন সিস্টার্স) স্থলবেষ্টিত বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশকে এ অঞ্চলে সমুদ্রের অভিভাবক হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

ড. ইউনূস সেখানে বলেছিলেন, ভারতের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত ৭টি রাজ্য সম্পূর্ণরূপে স্থলবেষ্টিত। সমুদ্রের সঙ্গে তাদের যোগাযোগের কোনো উপায় নেই। ফলে আমরাই এই অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক এবং বাংলাদেশ অন্যদের জন্য প্রধান প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করতে পারে। প্রধান উপদেষ্টার এ মন্তব্য ভারতের রাজনৈতিক নেতা ও কূটনীতিকদের মধ্যে আলোচনার সৃষ্টি করেছে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, এই মন্তব্যগুলো ভারতের ‘চিকেনস নেক’ করিডোরের দুর্বলতা নিয়ে পাকিস্তান ও চীনের দীর্ঘদিনের প্রচারণাকে মদদ দেবে। উত্তর-পূর্বকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করতে শক্তিশালী রেল ও সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ জরুরি।

ত্রিপুরার আদিবাসী দল টিপ্রা মোথার নেতা প্রদ্যোত মানিক্য বলেন, ১৯৪৭ সালে চট্টগ্রাম যদি ভারতের হাতে থাকলে আজ এ সমস্যা হতো না। বাংলাদেশের পরিবর্তে আমাদের নিজস্ব সমুদ্রবন্দর প্রয়োজন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত প্রাক্তন ভারতীয় হাইকমিশনার বীণা সিক্রি বলেন, উত্তর-পূর্ব ভারতের সমুদ্র প্রবেশাধিকার নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ইতোমধ্যেই চুক্তি রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের মন্তব্য অত্যন্ত হতাশাজনক। এ ধরনের মন্তব্য করার কোনো অধিকার তার নেই।

ড. ইউনূসের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন একাধিক কংগ্রেস নেতাও। কংগ্রেস নেতা পবন খেরা মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশের এ অবস্থান উত্তর-পূর্ব ভারতের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।

 

সংবাদ

দুদকের জালে আটকা পড়েছেন মোমিন

সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের প্রতিক্রিয়া

রাজউকের কর্মচারি “কোটিপতি” মোমিন!

রাজধানী উন্নয়ণ কর্পোরেশন (রাজউক) এর ডাটা এন্ট্রি অপারেটর আব্দুল মোমিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও থেমে নেই তার পদোন্নতি। তিনি চাকুরি শুরু করেন ১৯৯৮ সালে দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে কাজ দিয়ে। তিন বছরের মাথায় ২০০১ সালে চাকুরিচ্যুত করা হয়, তারপর ২০০৯ সালে চাকুরি ফিরে পেতে মামলা করেন এবং হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৩ সালের দিকে চুক্তিভিক্তিক চাকুরি ফিরে পান। তার ঠিক চার বছর পর ২০১৭ সালের দিকে চাকুরি স্থায়ী হয় মোমিনের। চাকুরি নিয়ে এত সংগ্রাম শেষে স্থায়ী হওয়ার পরই পাল্টে যায় দৃশ্যপট।

বিত্ত বৈভবে ফুলে ফেঁপে উঠেন মোমিন। তারপর পেছনে ফিরে দেখতে হয়নি এককালে দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে কাজ করা ডাটা এন্ট্রি অপারেটর আব্দুল মোমিনের।

গত ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগী আব্দুল মোমিন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর থেকে অনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমেই কাননগো পদে পদোন্নতি নিয়েছেন বলে রাজউকের একাধিক সূত্র জানিয়েছেন।

রাজউক এই কর্মচারী ডাটা এন্ট্রি অপারেটর আব্দুল মোমিনের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে প্ল্যান পাশ, প্লট হস্তান্তর, প্লট বিক্রয়ের দালালী, আবাসিক ভবনকে অ-আবাসিক বা বাণিজ্যে রুপান্তর, নারী কেলেঙ্কারি ইত্যাদি অবৈধ কাজের অভিযোগ রয়েছে। মোমিনের নারী কেলেঙ্কারী এবং স্পা সেন্টার নিয়ে আরেকটি প্রতিবেদনে তুলে ধরা হবে। এবিষয়ে এই প্রতিবেদকের কাছে তথ্য প্রমান রয়েছে।

আব্দুল মোমিন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৭১ নং ওয়ার্ডে ৫ কাঠা জমির উপর ‘শান্তির নীড় সুলতানা মহল’ নামে সাত তলা আলিশান ভবন যার বর্তমান বাজার মূল্য আনুমানিক ১৫ কোটি টাকার উপরে।
এছাড়া, মান্ডা মদিনা টাওয়ারের পাশে সাততলা ভবন নির্মাণ করছেন তিনি। মতিঝিলের জসিম উদ্দিন রোডে ১৮০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট কিনেছেন, যার বর্তমান বাজারমূল্য ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

অনুসন্ধানে আরো জানা যায় আব্দুল মোমিন অনিয়ম ও দুর্নীতির টাকায় স্ত্রীর নামে রয়েছে রাজউক পূর্বাচলে প্রায় কয়েক কোটি টাকা প্লট। স্বর্ণ চোরাচালান করে রাতারাতি শত শত কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনির রাজউক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহায়তায় সেখানেও নাম এসেছে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর আব্দুল মোমিনের। তার নিজের ব্যবহার করা প্রাইভেট কারের বাজার মূল্য ৩৫ লাখ টাকার উপরে।

দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনেও তার সম্পদের সত্যতাও পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য, উচ্চ আদালতের পৃথক দুটি সুয়োমুটো (স্বতঃপ্রণোদিত) রুলের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালে রাজউকের ২৭ কর্মকর্তা-কর্মচারীর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অনুসন্ধান শুরু করেছিল দুদক। এর মধ্যে একটি অনুসন্ধানে ১৬ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরুর পর কয়েক জনের বিরুদ্ধে আগে থেকেই দুদকে অনুসন্ধান চলমান ছিল। রাজউকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যাদের বিরুদ্ধেই অনুসন্ধান চালানো হয় তাদের মধ্যে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর আবদুল মোমিন অন্যতম।

রাজউকের একজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শেখ পরিবারের এক সদস্যের বাসায় নিয়মিত যাতায়ত করতেন মোমিন, সে প্রভাব তিনি রাজউকেও দেখাতেন এবং তার প্রভাবেই দুদকের মামলা ও রাজউকের অভিযোগ ধামাচাপা দিতে পেরেছিলেন। এছাড়া তিনি রাষ্ট্রপতি তার আত্মীয় পরিচয় দিতেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, দুদকের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরেও নির্বিঘ্নে একই কাজ করছেন এন্ট্রি অপারেটর আব্দুল মোমিন। রাজউক কি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে প্রতিবেদক তা জানার চেষ্টা করেও ব্যার্থ হয়। এ বিষয়ে রাজউক কোনো কর্মকর্তা গণমাধ্যমের সাথে কথা বলতে চায়নি।

রাজউকের অধিকাংশ অভিযুক্ত লগুদন্ডেই পার পেয়ে যাওয়ার নজিরও আছে বলে মন্তব্য করেন আইনজীবী সায়মে আহমেদ। তিনি আরও বলেন, অভিযুক্তদের শাস্তি নিশ্চিত করে তা জনসম্মুখে আনতে হবে, দুর্নীতিবাজদের সামাজিক ভাবেও বয়কট করতে হবে। কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমরা তেমন নজির কম দেখতে পাই বিশেষ করে রাজউককে, কারণ এদের অনেক কালো টাকা, তারা ফন্দি ফিকির করে কোনো না কোনো ভাবে বেঁচেই যায়।

দুর্নীতি দমন কমিশন সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত রাজউকের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় অর্ধশত কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিটও দেওয়া হয়েছে।

যদিও, গত সরকারের আমলে তা ধামাচাপা পরে। রাজউক সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তি মনে করেন আওয়ামী লীগ সরকারের আমালে যে সব দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি তারা সকলেই শেখ হাসিনা সরকারের মদদপুষ্ট, এসব অভিযোগ আবার আমলে নিয়ে পুনরায় তদন্ত করলে সম্পদের তথ্য এসেছে তার কয়েকগুণ বেশি সম্পদ পাওয়া যাবে। এবং তাদের শাস্তিও নিশ্চিত করতে হবে যেন সরকারি যে কোনো প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি বিরোধী বার্তা পৌঁছায়।

এসব অভিযোগের বিষয়ে রাজউকের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর আব্দুল মোমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কোন মন্তব্য করেননি, উল্টো বিভিন্ন অপরিচিত নম্বর থেকে সংবাদ প্রচার না করার জন্য হুমকি ধামকি দেন।

এই বিষয়ে রাজউকের চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, বিপিএএ বলেন, বর্তমানে রাজউকের বেশকিছু কর্মচারির মামলা হাইকোর্ট দেখছেন। পাশাপাশি দুদকও খোজ-খবর নিচ্ছেন। আমার মতে কোন অনিয়ম করা ঠিক না। যারা করবে তারা আইনের আওতায় আসবে। আইন তাদের বিচার করবে। যেহেতু এখনো তদন্ত চলছে এর বাহিরে আর কিছু বলা যাবে না।

চলবে……. 

বেবিচকের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারির বিলাসী জীবন

মো. শহীদুল্লাহ। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বেবিচকের একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারি। তার সমপর্যায়ের কর্মচারিদের যেখানে সংসার চালাতেই হিসসিম খেতে হয়, সেখানে শহীদুল্লাহ এখন শত কোটি টাকার মালিক। ঢাকা শহরে বিভিন্ন ভবনে শহীদুল্লাহর তিনটি ফ্ল্যাট থাকার তথ্য এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কাওলা মোল্লা বাড়ী আল্লাহর দান নামক ভবনে শহীদুল্লাহর ১ টি ফ্ল্যাট ও কাওলা কাসেম হোটেলের পাশে কাওলা প্যালেস বিল্ডিংয়ে ২টি ফ্ল্যাট রয়েছে। নামে বেনামে রয়েছে একাধিক ব্যবসা।

বর্তমানে শহীদুল্লাহ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)-এর সিকউরিটি সুপারভাইজার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। যেখানে যান সেখানেই দুর্নীতির আখড়া বসান এই তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। বেবিচকে চাকরি নেওয়ার পর শহীদুল্লাহ জানতে পারেন সেখানে প্রায় ১৪০০ (এক হাজার চারশত) জন কর্মচারী অস্থায়ী নিয়োগে রয়েছেন। তাদের চাকরি স্থায়ী করা ও সার্ভিস কাউন্টের জন্য মামলার খরচ বাবদ শহিদুল্লাহ ১২০০ (এক হাজার দুইশত) জন কর্মচারীর কাছ থেকে প্রায় ১ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। কিন্তু অদ্যবধী মামলার তেমন অগ্রগতি না হওয়ায় কর্মচারীরা মনে করেছেন উত্তোলিত টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন।

এত অভিযোগ থাকার পরও কিভাবে বেবিচকে বহাল তবিয়তে রয়েছেন মো. শহীদুল্লাহ, এমন প্রশ্ন এখন সর্বত্র। শহীদুল্লাহর বাবা মো. ওহিদুল্লাহ ছিলেন পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুন মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের গাড়িচালক। এত দুর্নীতির অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও শহীদুল্লাহ আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে ছিলেন দাপটের সঙ্গে। কিন্তু ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পরও কিভাবে এমন বহাল রয়েছেন সেটি ভেবে অবাক বেবিচকের অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারিরা। আওয়ামী লীগের দুর্নীতির অংশীদার শহীদুল্লাহর বিচার দেখতে চান বেবিচকের ভুক্তভোগী ১২০০ কর্মচারি ও তাদের পরিবার।

এ বিষয়ে শহীদুল্লাহর মুঠোফোনে চেষ্টা করে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি

স্বৈরাচার পালিয়েছে, সিরাজ ছিলেন, আছেন, থাকবেন!

একজন গাড়িচালক হয়েও এত ক্ষমতা সিরাজ পায় কোথায়? এমন প্রশ্ন সিভিল এভিয়েশন বাংলাদেশ (ক্যাব)-এ নিত্যদিনের প্রশ্ন। উত্তরও প্রায় সবার জানাই ছিল। অন্তত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ আমলে সবার কাছেই পরিষ্কার ছিল ব্যাপারটি।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খানের নাম ভাঙ্গিয়ে চলতেন সিরাজ দৌলা। দাবি করতেন তার দাদাশ্বশুর সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আহাম্মদ আলী ফারুক খানের আস্থাভাজন। তাই সিরাজের দাপটে চুপ থাকতে হতো কর্মকর্তাদেরও। এমনকি সেই সময়ে ডিজিএফআইয়ের বিমানবন্দর ডেস্কে তিনি সোনা চোরাচালানের অপরাধে আটক হয়েও পেতে হয়নি কোনো শাস্তি। সেসময় তার বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে তাকে বদলি করাসহ নানা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। যার কপি এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

কিন্তু কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তখন আওয়ামী শক্তি খাটিয়ে রয়ে যান সিরাজ। তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা তো দূরে থাক, বদলি ও করতে পারেনি সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। সিরাজ আছেন। যেমন প্রভাবে ছিলেন তেমনই আছেন। প্রশ্ন- এভাবেই থাকবেন?

স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ তো এখন নেই তাহলে দোসর সিরাজ এখন কোথায়? এই প্রতিবেদক খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, সিরাজ দৌলা এখনো সিভিল এভিয়েশনে আছেন আগের মতোই। দাপটও কমেনি তার। এখন তবে পেছনে কে?

সিরাজের খোঁজে বিমানবন্দর এলাকায় গিয়ে দেখা মেলে সিরাজের। প্রথম দেখায় মোটেও গাড়িচালক মনে হয়নি তাকে। বেশভূষায় বেশ জমিদারি ভাব। যেন সত্যি তিনি নবাব সিরাজউদ্দৌলা। নামের যথা ব্যবহার, মন্দ নয়। কিন্তু একজন গাড়িচালক কিভাবে এত আয়েশী জীবন-যাপন করেন? এত আয়ের উৎস কী? সেই তথ্যও সংবাদের শুরুর দিকে দেওয়া আছে। একটি বৃহৎ সোনাচোরাকারবারি সিন্ডিকেট তৈরিতে সক্ষম হয়েছেন সিরাজ। হয়তো সেই টাকা দিয়েই এখনো টিকে আছেন সিভিল এভিয়েশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়।

ভেতরে ভেতরে নাখোস থাকলেও সিরাজের ব্যাপারে প্রকাশ্যে কথা বলার সাহস পায় না কেউ।

ডা. স্বপ্নীলের নিবন্ধন বাতিলের নির্দেশ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের নিবন্ধন বাতিলের জন্য বাংলাদশে মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলকে (বিএমডিসি) নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

দুই বছর আগে প্রকৌশলী আফসার আহমেদের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে দায় খুঁজে পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হলো।

একইসঙ্গে ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ গত ১৬ জানুয়ারি বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) ও স্বাস্থ্য অধিদফতরকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেয়। চিঠির অনুলিপি মঙ্গলবার আফসার আহমেদের পরিবারের হাতে পৌঁছেছে।

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপ-সচিব শারাবান তাহুরার স্বাক্ষরে বিএমডিসির রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক মামুন আল মাহতাবের (স্বপ্নীল) বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের প্রকৌশলী আফসার আহমেদের এন্ডোস্কপিকালীন মৃত্যুর অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করা তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দিয়েছে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, দায়িত্বে অবহেলার কারণে অধ্যাপক মামুন আল মাহতাবের (স্বপ্নীল) ‘বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়কে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হলো।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. আবু জাফরকে পাঠানো মন্ত্রণালয়ের আরেক চিঠিতে বলা হয়, ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল বিরুদ্ধে প্রকৌশলী আফসার এন্ডোস্কপিকালীন মৃত্যুর অভিযোগ রয়েছে।

খেলা

আইএফআইসি ব্যাংকের চেক ডিজঅনার মামলায় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।রবিবার (১৯ জানুয়ারি) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন।

জানা গেছে, গত ১৫ ডিসেম্বর ব্যাংকের রিলেশনশিপ অফিসার সাহিবুর রহমান বাদী হয়ে সাকিব আল হাসানসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। অপর আসামিরা হলেন- সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্মের ম্যানেজিং ডিরেক্টর গাজী শাহাগীর হোসাইন, ডিরেক্টর ইমদাদুল হক ও মালাইকার বেগম। মামলায় সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্মকেও আসামি করা হয়।

গত ১৮ ডিসেম্বর আদালত আসামিদের আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন। এদিন সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্মের ডিরেক্টর ইমদাদুল হক আত্মসমর্পণ করে জামিন পান। আর মালাইকা বেগম মারা যাওয়ায় মৃত্যু প্রতিবেদন চাওয়া হয়। তবে সাকিব আল হাসান ও অ্যাগ্রো ফার্মের ম্যানেজিং ডিরেক্টর গাজী শাহাগীর হোসাইন আদালতে হাজির হননি। এজন্য আদালত তাদের দুই জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। আদালত সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেড’- এর চেয়ারম্যান হিসেবে সাকিব আল হাসান দায়িত্ব পালন করছেন। কোম্পানিটির কার্যক্রম সাতক্ষীরায়। কোম্পানিটি ২০১৭ সালে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে এক কোটি এবং টার্ম লোন হিসেবে দেড় কোটি টাকা বনানী শাখার আইএফআইসি ব্যাংক থেকে নেন।

পরবর্তীতে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে নেওয়া টাকা সময় মতো পরিশোধ না করায় ব্যাংকটি এই টাকা মেয়াদি লোনে পরিবর্তন করে। টাকা ফেরত চেয়ে কয়েক দফা নোটিশ দেওয়ার পর কোম্পানিটি ব্যাংককে চলতি বছরের ৪ সেপ্টেম্বর চার কোটি ১৪ লাখ টাকার দুটি চেক দেয়। তবে সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টে যথেষ্ট টাকা না থাকায় চেক বাউন্স করে। পরে ঋণের টাকা ফেরত চেয়ে আইএফআইসি ব্যাংকের বনানী শাখা নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী দৈনিক পত্রিকার মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ পাঠায়। নোটিশ পাঠানোর ৩০ দিন পার হলেও তা না পেয়ে আদালতে মামলাটি করা হয়।

কানপুর টেস্টে ৭ উইকেটের জয় তুলে নিল ভারত। দুইদিনেরও কম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশকে হারাল ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ টেবিলের শীর্ষ দলটি।

আজ পঞ্চম ও শেষ দিন স্বাগতিকদের মাত্র ৯৫ রানের টার্গেট দিতে সমর্থ হয় সফরকারীরা। ৩ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৭.২ ওভারেই এই রান তুলে নেয় রোহিত শর্মার দল।

আজ মঙ্গলবার ২ উইকেটে ২৬ রান নিয়ে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশ প্রথম সেশনে ১৪৬ রানে গুটিয়ে যায়। খুবই সহজ একটি টার্গেটের সামনে পড়ে ভারত। জশস্বী জয়সোয়াল (৫১) ও বিরাট কোহলির (২৯*) ব্যাটে ভর দিয়ে টার্গেট ছুঁয়ে ফেলে স্বাগতিক দল।

বৃষ্টির কারণে প্রথম দিন ৩৫ ওভারের খেলা হয়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন বৃষ্টি ও আলোকস্বল্পতা কোনো খেলাই হয়নি। চতুর্থ দিন জমজমাট লড়াইয়ে ১৮ উইকেটের পতন হয় দুই দলের। ভারত আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ম্যাচের ফল নির্ধারণের আপ্রাণ চেষ্টা করে। লক্ষ্যপূরণ হয়েছে তাদের। পঞ্চম ও শেষ দিন এক সেশনেরও বেশি সময় হাতে রেখে তারা বিজয়ী হয়েছে।

পাঁচ দিন মিলে ৪৫০ ওভারের খেলা হওয়ার কথা। যদিও সেখানে খেলা হয়েছে মাত্র ১৭২.২ ওভারের, যা দুই দিনেরও কম! শেষ দিন ৪৫ ওভারের মতো খেলা বাকি ছিল। এই সময়ের মধ্যেই দাপট দেখিয়ে জিতল ভারত। মূলত, রোহিত শর্মারা হারালেন বৃষ্টি, সময় আর বাংলাদেশ—এই তিন প্রতিপক্ষকে।

পাকিস্তানের সেমিফাইনালে যেতে পারে

বিশ্বকাপের আগে ওয়ানডে ফরম্যাটে পাকিস্তান ছিল অন্যতম ফেভারিট। বাবর আজমদের নেতৃত্বে দলটি দারুণ ছন্দে ছিল। ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়েও ছিল শীর্ষে। তবে বিশ্বকাপে ভারতের কাছে হারের পর পাকিস্তানের সেই উড়ন্ত পাখি যেন মরা মাছে পরিণত হয়েছে। এখন তারা বাদ পড়ার শঙ্কায় রয়েছে। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত পাকিস্তান খেলেছে পাঁচটি ম্যাচ। এর মধ্যে দুটিতে জয়, তিনটিতে হার। পয়েন্ট তালিকার পঞ্চম স্থানে রয়েছে তারা। বাকি চারটি ম্যাচে জিততে না পারলে তারা বাদ পড়তে পারে।

বিশ্বকাপের আগে পাকিস্তানের দলটি ছিল বেশ ভারসাম্যপূর্ণ। ব্যাটিং, বোলিং সব ক্ষেত্রেই ছিল শক্তিশালী। তবে বিশ্বকাপে ভারতের কাছে হারের পর দলের মনোবল ভেঙে পড়েছে। ব্যাটিংয়ে ধারাবাহিকতা নেই। বোলিংয়েও চোখে পড়ার মতো পারফরম্যান্স নেই। পাকিস্তানের বাদ পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে কারণ দলের সামনের ম্যাচগুলো বেশ কঠিন। দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে খেলতে হবে। পাকিস্তান যদি বাদ পড়ে তাহলে এটি হবে তাদের জন্য বড় ধাক্কা। দলটি ২০১৯ সালের বিশ্বকাপেও শেষ চারে উঠতে পারেনি।

বিশ্বকাপের আগের পাকিস্তান ছিল উড়ন্ত পাখি"

টানা চার হারে এই মুহূর্তে বাজে সময় পার করছে পাকিস্তান। সবশেষ গতকাল শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টানটান উত্তেজনার ম্যাচে ১ উইকেটে হেরে যান বাবর আজমরা। ৬ ম্যাচ থেকে এখন তাদের সংগ্রহ মোটে ২ পয়েন্ট। অবস্থা এতটাই শোচনীয়, বিশ্বকাপ থেকেই ছিটকে যেতে পারে তারা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার জয় তাদের ঠেলে দেবে খাদের কিনারে।

পরের ৩ ম্যাচ জিতলে ১০ পয়েন্টে পৌঁছে যাবেন বাবরেরা। তবে শুধু সেই ম্যাচ জিতলেই সেমিফাইনালে ওঠা নিশ্চিত হবে না পাকিস্তানের। পাকিস্তানের ম্যাচ বাকি বাংলাদেশ (৩১ অক্টোবর), নিউজিল্যান্ড (৪ নভেম্বর) এবং ইংল্যান্ডের (১১ নভেম্বর) বিরুদ্ধে। এদের মধ্যে নিউজিল্যান্ড আছে। কিউইদের পয়েন্ট ৮ । আর চতুর্থ স্থানে পাকিস্তানের বাকি প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। তাদের পয়েন্ট ৬। লঙ্কানদের পয়েন্ট সমান ৪ হলেও রানরেটে তারা এগিয়ে।

এই মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়া আর দুই ম্যাচ জিতলে বা শ্রীলঙ্কা যদি তিন ম্যাচ জেতে তবে পাকিস্তানের বাদ পড়ার শঙ্কাই বেশি। রানরেটে পিছিয়ে থাকার কারণে সেমির দৌড় থেকে ছিটকে যাবে তারা। আবার বাংলাদেশ যদি নিজেদের চার ম্যাচের সবকটিতে জয় পায়, তবে সেটাও হবে পাকিস্তানের ভয়ের কারণ।

সেমিফাইনালে যেতে তাই পাকিস্তানকে কেবল নিজেদের ম্যাচে জিতলেই হবে না, অস্ট্রেলিয়া এবং শ্রীলঙ্কার পাশাপাশি বাংলাদেশও যেন ১০ পয়েন্ট না পায়, সেই প্রার্থনা করতে হবে।

দুটি পরিবর্তন নিয়ে ফিল্ডিং বাংলাদেশের

টানা চার ম্যাচ হারের পর বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার শঙ্কা বাড়ছে বাংলাদেশের। ঘুরে দাঁড়াতে এবার ডাচদের সামনে মরিয়া সাকিবরা। শক্তিমত্তা বিবেচনায় ডাচদের চেয়ে ঢের এগিয়ে টাইগাররা। তবে তাদের সাম্প্রতিক ফর্ম চিন্তার বড় কারণ। একই সঙ্গে বাড়তি চাপও আছে সাকিবের দলের। আসরে টিকে থাকতে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই তাদের। তবে টসে হেরে ফিল্ডিং করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।

বাংলাদেশের একাদশে এসেছে দুই পরিবর্তন। বাদ পড়েছেন নাসুম আহমেদ ও হাসান মাহমুদ। নাসুমের জায়গায় নেয়া হয়েছে শেখ মেহেদি হাসানকে। ডানহাতি স্পিনের সঙ্গে ব্যাটটাও চালাতে পারেন তিনি। তাই ব্যাটিংয়ে বাড়তি বিকল্প পাচ্ছে দল। পেস বিভাগে হাসানের বদলি চোট কাটিয়ে দলে ফেরা তাসকিন আহমেদ

নেদারল্যান্ডস একাদশ- ম্যাক্স ও’ডাউড, বিক্রমজিৎ সিং, ওয়েসলি বারেসি, কলিন অ্যাকারম্যান, স্কট এডওয়ার্ডস, বাস ডি লিডি, সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট, লোগান ফন বেক, শরিজ আহমেদ, আরিয়ান দত্ত, পল ফন মিকারেন।

বাংলাদেশ একাদশ- লিটন দাস, তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, শেখ মেহেদী হাসান, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম।

বিনোদন
মতামত

বয়স মাত্র ৩৩। চাইলে অনায়াসেই আরও চার-পাঁচ বছর আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলে যেতে পারতেন আন্তোনিও গ্রিজম্যান; কিন্তু তা না, হঠাৎ করেই আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলে দিলেন টানা দু’বার বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা ফ্রান্সের এই ফুটবলার।

বিশ্বকাপের দুই ফাইনালের প্রথম বার জয় করেছিলেন, পরেরবার হেরেছেন মেসির আর্জেন্টিনার কাছে। স্পেনের ঘরোয়া লিগ লা লিগায় মাদ্রিদ ডার্বিতে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে খেলার পর সোমবার এক ভিডিও বার্তায় এ ঘোষণা দেন তিনি।

বিশ্বকাপের দুই ফাইনাল ছাড়াও ২০১৬ ইউরোর ফাইনাল খেলেছিলেন তিনি। যেটাতে হেরেছিলেন পর্তুগালের কাছে। এছাড়া ২০২১ সালের উয়েফা নেশন্স লিগও জিতিয়েছেন ফ্রান্সকে।

সর্বশেষ ১০ সেপ্টেম্বর উয়েফা নেশন্স লিগে বেলজিয়ামের বিপক্ষে ফ্রান্সের জার্সি গায়ে খেলেছিলেন তিনি। এছাড়া সর্বশেষ ইউরো চ্যাম্পিয়শিপের সেমিফাইনালে স্পেনের কাছে যে দলটি হেরেছে, সেই দলেরও অংশ ছিলেন তিনি।

আধুনিক ফ্রান্স ফুটবল দলের অন্যতম সফল তারকা গ্রিজম্যান। ভিডিও বার্তায় জাতীয় দল, সমর্থক এবং সতীর্থদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন এই মিডফিল্ডার।

অভিষেকের পর গত ১০ বছরে ফ্রান্সের হয়ে ১৪৭টি ম্যাচ খেলেছেন। গোল করেছেন ৪৪টি। তবে শুধু গোলসংখ্যা দিয়ে তাকে বর্ণনা করা যাবে না। খেলা তৈরি করা এবং অক্লান্ত পরিশ্রম করার জন্য সুনাম রয়েছে তার। আক্রমণ এবং রক্ষণ দুই বিভাগের প্রতিনিয়ত দলকে সাহায্য করে গেছেন।

২০১৮ বিশ্বকাপের ফাইনাল জেতা গ্রিজম্যানের জীবনের অন্যতম সেরা কীর্তি। ফাইনালে দলকে ট্রফি জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও রেখেছিলেন। ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ হারানোর ম্যাচে গোল করেন তিনি। সেবারের বিশ্বকাপে চারটি গোল এবং চারটি অ্যাসিস্ট ছিল তার। গ্রিজম্যানের খেলা নজর কেড়েছিল সবার।

জাতীয় দলের হয়ে ২০১৪ সালে অভিষেক হয়। এরপর থেকে দিদিয়ের দেশমের দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন তিনি। মূলত মাঝমাঠের আসল কান্ডারি ছিলেন গ্রিজম্যান।

ফ্রান্সকে বিদায় জানালেও ক্লাব ফুটবলে খেলা চালিয়ে যাবেন। পেশাদার জীবনের বেশির ভাগ সময়ই কাটিয়েছেন অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে। মাঝে তিন বছর ছিলেন বার্সেলোনায়। আবার অ্যাটলেটিকোয় ফিরেছেন। রোববার রাতে মাদ্রিদ ডার্বিতেও খেলেছেন। ম্যাচটি ১-১ ড্র হয়েছে।

 

প্রযুক্তি ও স্টার্টআপ
জাকারবার্গের সফলতার গল্প

বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক। এর প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। তার পুরো নাম মার্ক এলিয়ট জাকারবার্গ। মাত্র ২০ বছর বয়সে ফেসবুক তৈরি করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিলেন তিনি। তার এই সফলতার স্বপ্ন বুনেছিলেন ছোট থেকেই।

মার্ক জাকারবার্গের জন্ম-পরিচয়

১৯৮৪ সালের ১৪ মে নিউইয়র্কের হোয়াইট প্লেইন শহরে জন্ম নেন মার্ক জাকারবার্গ। তার মা ছিলেন মনোচিকিৎসক আর বাবা ছিলেন দন্তচিকিৎসক।

মার্ক জাকারবার্গের লেখাপড়া
ছোট থেকেই প্রযুক্তি আর সাহিত্যতে বেশ আগ্রহী ছিলেন জাকারবার্গ। আর্ডসেলি হাই স্কুলে গ্রিক এবং ল্যাটিন ভাষায় পারদর্শী হয়ে ওঠেন তিনি। পাশাপাশি বিজ্ঞান এবং ক্লাসিক্যাল শিক্ষায় পুরস্কৃত হন। অসি ক্রীড়া তারকাও ছিলেন মার্ক।

কলেজে পড়াকালে তিনি মহাকাব্যিক কবিতার লাইন থেকে আবৃত্তি করার জন্য পরিচিত ছিলেন।

পরে ক্লাসিক সাহিত্যে বিশেষ ডিপ্লোমাও অর্জন করেছিলেন। তবে সেখানেই থেমে থাকেননি মার্ক। বরাবরই ঝোঁক ছিল কম্পিউটারের প্রতি। সেই ঝোঁক থেকেই বিশ্বের অন্যতম নামকরা প্রতিষ্ঠান হার্ভার্ডে ভর্তি হন কম্পিউটার সায়েন্সে। সেখানেও তিনি অল্প সময়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। তবে একজন ভালো ছাত্র হিসেবে নয়, একজন প্রোগ্রামার হিসেবে।

তার কাছে যে কোনো সফটওয়্যার তৈরি ছিল যেন বাঁ হাতের খেলা।

প্রোগ্রামিংয়ে তার আগ্রহ ছিল স্কুলজীবন থেকেই। মার্কের বয়স যখন প্রায় ১২ বছর, তখন তিনি অ্যাটারি বেসিক ব্যবহার করে মেসেজিং প্রোগ্রাম তৈরি করেছিলেন। মার্ক যার নাম দিয়েছিলেন ‘জুকনেট’। যা দিয়ে পরিবারের সঙ্গে ভাব বিনিময়ের জন্যেও ব্যবহার করতেন।

মার্কের কম্পিউটারের প্রতি আগ্রহ দেখে তার বাবা-মা একজন ব্যক্তিগত কম্পিউটার শিক্ষক রাখেন। ডেভিড নিউমা নামের সেই শিক্ষক বাড়িতে এসে সপ্তাহে এক দিন মার্ককে কম্পিউটার শেখাতেন। মার্ক তার উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে থাকতে একটি এমপি থ্রি মিডিয়া প্লেয়ারও তৈরি করেছিলেন।
জাকারবার্গের পরিবার
জাকারবার্গের স্ত্রীর নাম প্রিসিলা চ্যান। ২০১২ সালে তাদের বিয়ে হয়। তাদের দুটি কন্যাসন্তান আছে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে জাকারবার্গের প্রথম সন্তান মাক্সিমা চ্যান জাকারবার্গের জন্ম হয়। ২০১৭ সালের আগস্টে জন্ম হয় দ্বিতীয় সন্তানের। তার নাম রাখা হয় আগস্ট। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে জাকারবার্গ তার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কথা ঘোষণা দিয়েছিলেন।

মার্ক জাকারবার্গ যেভাবে ফেসবুক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন
২০০৩ সালের ২৮ অক্টোবর জাকারবার্গ ফেসম্যাশ ডটকম নামে একটি ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আর ওই সাইটের জন্য নিজের কলেজের ডেটাবেজও হ্যাক করেছিলেন তিনি। পরে অবশ্য কলেজের শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে এই সাইট বন্ধ করতে বাধ্য হন জাকারবার্গ।

মূলত ওই ফেসম্যাশ ওয়েবসাইট থেকেই ফেসবুকের চিন্তা মাথায় আসে জাকারবার্গের। এরপর ২০০৪ সালে তার রুমমেট ও কম্পিউটারবিজ্ঞান বিষয়ের ছাত্র এডওয়ার্ডো সেভারিন, ডাস্টিন মস্কোভিত্স এবং ক্রিস হিউজেসের সাহায্য নিয়ে ফেসবুক নির্মাণ করেন।

মার্ক জাকারবার্গ যখন ‘দ্য ফেসবুক’ নামে নতুন সাইটটি চালু করেন তার পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ১ হাজার ২০০ জন শিক্ষার্থী এতে রেজিস্ট্রেশন করেন। প্রথমদিকে এটি শুধু হার্ভার্ড কলেজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলেও দুই মাসের মাথায় আরও এটি বোস্টন শহরের অন্যান্য কলেজ, আইভি লীগ এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়।
ফেসবুকের বর্তমান অবস্থা
এখন সারা বিশ্বে সক্রিয় ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৩০০ কোটি। যারা মাসে একবার হলেও ফেসবুকে ঢুঁ মারেন। মার্ক জাকারবার্গ এখন মেটার মালিক। যার আওতায় ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপসহ আরও বেশকিছু প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। সবটির মালিকই ৩৮ বছর বয়সী জাকারবার্গ। এক সময় বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় উপরের দিকে থাকলেও এখন তার অবস্থান ১৬তম। ফোর্বস ম্যাগাজিনের তথ্য অনুযায়ী, জাকারবার্গের মোট সম্পদের পরিমাণ ৬৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

শিক্ষা
বাণিজ্য

ফেসবুক লাইভে এসে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি আরিফুর রহমানকে পেটানোর হুমকি দিয়েছেন তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ।  

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাত ১০টা ৩৯ মিনিটে নিজের ফেসবুকে লাইভে এসে দুর্ধর্ষ এই সন্ত্রাসী ওসিকে হুমকি  দেন। এ ঘটনায় ওসি বাদী হয়ে রাতেই থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

দুই মিনিট ২৭ সেকেন্ডের লাইভে ওসিকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করে তিনি (ওসি) কোনো অবস্থাতেই ওসি আরিফুর তার হাত থেকে রেহায় পাবেন না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন সাজ্জাদ।

লাইভে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় সাজ্জাদ বলেন, ওসি আরিফ দেশের যে প্রান্তেই থাকেন না কেন, তাকে নগরের অক্সিজেনে ধরে এনে পেটাবেন। প্রয়োজনে তিনি মরে যাবেন। কিন্তু হার মানবেন না।

এ ছাড়া লাইভে নগর পুলিশ কমিশনারকে উদ্দেশ্য করে সাজ্জাদ বলেন, ওসি আরিফ চাঁদাবাজিসহ তার সন্তান হত্যায় জড়িত। তাকে যাতে বদলি করা হয়।

ফেসবুক লাইভে শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদের কাছ থেকে পেটানোর হুমকি পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বায়ে-জিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়েছে। দুর্ধর্ষ এই সন্ত্রাসীর চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজি বন্ধে পুলিশের কঠোর অবস্থানের কারণে বাহিনী নিয়ে মিথ্যাচার করছে সে। তাকে ধরতে পুলিশ চেষ্টা করছে।’

সাজ্জাদ হোসেন বিদেশে পলাতক ‘শিবির ক্যাডার’ হিসেবে পরিচিত আরেক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীর অনুসারী। গত বছরের ১৭ জুলাই অস্ত্রসহ সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরের মাসে জামিনে বেরিয়ে পুনরায় অপরাধ জগতে জড়িয়ে পড়েন সাজ্জাদ।

ট্রিপল মার্ডারসহ এক ডজন মামলার এই আসামি সাজ্জাদ নগরের হাটহাজারীর শিকারপুর এলাকার মো. জামালের ছেলে তিনি। সর্বশেষ গত বছরের ৪ ডিসেম্বর নগরের অক্সিজেন এলাকায় সাজ্জাদকে পুলিশ ধরতে গেলে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যান তিনি। এ ঘটনায় সিটি ব্যাংকের বুথের এক নিরাপত্তাকর্মী গুলিবিদ্ধ হন।

পাশাপাশি একই ঘটনায় আহত চারজন পুলিশ সদস্য। নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার অক্সিজেন অনন্যা, শীতলঝরনা, কালারপুল, বায়েজিদ থানার সীমান্তবর্তী হাটহাজারীর কুয়াইশ, নগরের চান্দগাঁও হাজীরপুল ও পাঁচলাইশ এলাকায় ক ২০/২২ জনের বাহিনী নিয়ে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালান সাজ্জাদ। চাঁদা না পেলেই গুলি করেন সাজ্জাদ।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ কালারপুল এলাকার একটি নির্মাণাধীন ভবনে চাঁদা না পেয়ে গুলি করেন সাজ্জাদ। ভবনমালিকদের সাজ্জাদকে পাঁচ লাখ টাকা দিতে হয়েছে। ৫ জুলাই বায়েজিদ থানার বুলিয়াপাড়া এলাকায় একটি বাসা লক্ষ্য করে গুলি করেন সাজ্জাদ ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী ইকবাল নামের এক ব্যক্তি। চাঁদা না পেয়ে গত বছরের ২৭ অক্টোবর নগরের চান্দগাঁও হাজীরপুল এলাকায়  মো. হাছান নামের এক ঠিকাদারের বাসা লক্ষ্য করেও গুলি করেন সাজ্জাদ। এ ঘটনায় হাছান বাদী হয়ে চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন।

গত ২১ অক্টোবর নগরের চান্দগাঁওয়ের শমসেরপাড়া এলাকায় আফতাব উদ্দিন নামের এক বালু ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা করে সাজ্জাদ। গত ২৯ আগস্ট বায়েজিদ থানাধীন অনন্যা আবাসিক এলাকা এবং ওই থানার সীমানা-সংলগ্ন কুয়াইশ এলাকায় প্রকাশ্যে গুলি করে খুন করা হয় মো. আনিস ও মাসুদ কায়সার নামে দুই যুবককে। এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয় বায়েজিদ ও হাটহাজারী থানায়। মামলা দুটিতে সাজ্জাদ ও তার সহযোগীদের আসামি করা হয়।

দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার (এসকে) সুর চৌধুরীর বাসায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযান চলছে।

রবিবার (১৯ জানুয়ারি) ধানমন্ডিতে তার বাসায় অভিযানে এখন পর্যন্ত ১৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। দুদক পরিচালক মো. সাইমুজ্জামানের নেতৃত্বে এ অভিযান চলছে।

দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দুদকের একটি এনফোর্সমেন্ট টিম এস কে সুরের বাসায় অভিযান চালাচ্ছে।আপনাদের এ–সংক্রান্ত তথ্য পরে জানানো হবে।

গত ১৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার (এস কে) সুর চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে দুদক। সংস্থাটির এনফোর্সমেন্ট টিম রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশিদের ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট অ্যান্ড অ্যাগ্রো লিমিটেডে’ অভিযান চালিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) গোয়েন্দা বিভাগ সিআইসি।

সোমবার কিশোরগঞ্জে ওই রিসোর্টে অভিযানে নথিপত্র ও কম্পিউটার জব্দের কথা বলেছেন সিআইসির মহাপরিচালক আহসান হাবিব।

তিনি বলেন, “আমরা অভিযান চালিয়েছি। এখন প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ কত দেখানো হয়েছে, আর আসলে এতে বিনিয়োগ কত, সেটি বের করে বাকি অর্থের ওপর কর আরোপ করে দেব এবং সোজাসাপ্টা মামলা করে দেব।”

তিনি বলেন, “তার (হারুন) স্ত্রী, মা, ভাই ও শ্যালক এ রিসোর্টের পরিচালক। মা ও স্ত্রীর আয় না থাকায় এটিও তার ওপর বর্তাবে।”

কিশোরগঞ্জের হাওর এলাকায় ৪০ একর জমি জুড়ে রয়েছে রিসোর্টটি। এর পাশেও বহু জমি ‘দখল ও জোর করে নেওয়ার’ তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছেন আহসান হাবিব।

এর আগে প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট অ্যান্ড অ্যাগ্রো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালকসহ ছয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে আট সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে সিআইসি। সংস্থাটির পরিচালক মিজ চাঁদ সুলতানা চৌধুরানীর নেতৃত্বে ওই কমিটি হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট রিসোর্টের পরিচালক শিরিন আক্তার, জহুরা খাতুন, আলাউদ্দিন আল সোহেল ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম শাহরিয়ার বিরুদ্ধে তদন্ত করবে কমিটি। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টার তথ্যে হারুন অর রশিদ, সোমরাজ মিয়া ও মোছা. মিনারা বেগমের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করছে সিআইসি।

আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা হারুনের হদিস মিলছে না গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই। তার বিরুদ্ধে ‘কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ’ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক।

২০২২ সালের জুলাই থেকে ডিএমপির ডিবি প্রধানের দায়িত্ব পালন করছিলেন হারুন অর রশীদ। গণআন্দোলনে সরকার পতনের চার দিন আগে গত ৩১ জুলাই তাকে সেখান থেকে সরিয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) দায়িত্ব দেওয়া হয়।

ডিবিতে দায়িত্ব পালনকালে হারুন তার কার্যালয়ে অভিযোগ নিয়ে আসা বিভিন্নজনকে ভাত খাওয়াতেন। সেসব ছবি নিজের ফেইসবুকে শেয়ার করতেন, যা নিয়ে বেশ আলোচনা ছিল।

সবশেষ কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কারীকে তুলে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে কয়েকদিন রাখেন হারুন। তাদের আপ্যায়ন করার একটি ছবি আবার আলোচনা তৈরি করে।

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার থাকাকালে ২০১১ সালে তৎকালীন বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ বিএনপি নেতা জয়নুল আবদিন ফারুককে ধাওয়া দিয়ে পিটিয়ে আলোচিত হন হারুন।

পরে ডিএমপির লালবাগ বিভাগে কয়েক বছর দায়িত্ব পালনের পর গাজীপুরের পুলিশ সুপার হন তিনি। সেখানে কয়েক বছর দায়িত্ব পালনের মধ্যে ২০১৮ সালের মে মাসে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় বিএনপি তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তোলে। এরপর ওই বছরের অগাস্টের শুরুতে তাকে ঢাকা মহানগর পুলিশে বদলি করা হয়।

নারায়ণগঞ্জে ১১ মাসের দায়িত্বে হকার ও অবৈধ দখল উচ্ছেদসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়ে তিনি যেমন প্রশংসিত হন, তেমনি এ জেলার অনেক প্রভাবশালীর সঙ্গে ‘টক্করে’ গিয়ে আলোচনার জন্ম দেন।

২০১৯ সালে পারটেক্স গ্রুপের কর্ণধার এম এ হাশেমের ছেলে আমবার গ্রুপের চেয়ারম্যান শওকত আজিজের স্ত্রী ও সন্তানকে আটক করেও আলোচনায় আসেন তিনি। পরে তাকে নারায়ণগঞ্জ থেকে সরিয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে আনা হয়।

ডিআইজি হিসেবে ২০২২ সালের ১১ মে পদোন্নতি পাওয়ার পর একই বছর ১৩ জুলাই ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে ডিবির দায়িত্ব পান। তার আগে অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

কূটনৈতিক জোন খ্যাত গুলশান থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিউটিরত একটি গাড়ি লাপাত্তা। ৯৬ ঘণ্টা আগের অর্থাৎ শনিবার রাতের ঘটনা এটি। কিন্তু এখনো গাড়িটির অবস্থান শনাক্ত করা কিংবা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লোগো এবং সরকারি স্টিকার সংবলিত সাদা রঙের টয়োটা প্রিমিও-১৭ মডেলের প্রাইভেটকারটি লাপাত্তা হওয়ার বিষয়ে ঘটনার পরদিন গুলশান থানায় একটি মামলা হয়েছে। যার নম্বর-২২/২৪-১১-২৪। পেনাল কোডের ৩৭৯ ধারায় মামলাটি নথিভুক্ত হয়। ঘটনার বিষয়টি স্বীকার করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ তারেক মাহমুদ।

তিনি বলেন, ঘটনার পর থেকে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল এবং এর আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে অপরাধীদের শনাক্ত করার পথে অনেক দূর এগিয়েছেন তারা। তিনি আশা করেন দ্রুততম সময়ের মধ্যেই গাড়িটি উদ্ধারে সক্ষম হবে পুলিশ।

গুলশান থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর দাখিল করা এজাহারে গাড়ির তত্ত্ব্বাবধায়ক ও মামলার বাদী শাহাদাত হোসেন জানান, গত ২৩শে নভেম্বর আনুমানিক রাত সাড়ে ১০টার দিকে গুলশান-২, রোড নং-৯৬, বাড়ি নং-১৭ এর সামনের পাকা সড়কে অস্থায়ী পার্কিং অবস্থায় ছিল তার গাড়িটি। যা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব (RO &‌ MA) দপ্তরের দাপ্তরিক কাজে নিয়োজিত ছিল। সাদা রংয়ের PREMIO-১৭ মডেলের প্রাইভেট কার এটি। যার চেসিস নম্বর- NZT২৬০-৩১৯৯৪২৫, ইঞ্জিন নম্বর- IZT-৮৩৬১৬১৮, রেজিস্ট্রেশন নম্বর-ঢাকা মেট্রো.-গ-৪২-৯১৪৮।

বাদী জানান, তার গাড়ির ড্রাইভার ছিলেন মো. ওয়াসিম নলী (৩৭), পিতা-মো. হান্নান নলী, স্থায়ী ঠিকানা- হরিনাথপুর (জেটিকাডা), থানা-হিজলা, জেলা-বরিশাল বর্তমান সাং- হোল্ডিং নং-৭২/খ, পশ্চিম আগারগাঁও, থানা-মোহাম্মদপুর, জেলা-ঢাকা। ঘটনার বিষয়ে তিনি  লিখেন- গাড়িটি RAASAD BAIVAB (গুলশান-২, রোড নং-৯৬, বাড়ি নং-১৭)-এর সামনে পাকা রাস্তার উপর রেখে একটু দূরে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে যান ড্রাইভার ওয়াসিম। ফিরে এসে দেখেন যেখানে গাড়িটি রেখে গেছিলেন সেখানে নেই।

তার দাবি অজ্ঞাতনামা চোররা গাড়িটি চুরি করে নিয়ে গেছে। এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন ড্রাইভার ওয়াশিম গাড়িটি আশপাশে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে তাকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানান। সেই ফোন পেয়ে তিনি তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে পৌঁছান। নিজেও আশপাশের লোকজনদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু কেউই গাড়িটির বিষয় কোনো তথ্য দিতে পারেননি। বাসায় ফিরে তিনি ঘটনার বিষয়ে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং থানায় হাজির হয়ে এজাহার দায়ের করেন। যাতে খানিকটা বিলম্ব হয়।

জীবনযাপন

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, গত দেড় দশকে শেখ হাসিনা নিজে ও পরিবারের লোকজনের সমন্বয়ে দেশে গোষ্ঠীতন্ত্র কায়েম করেছিলেন।

এখন শেখ হাসিনা পাশের দেশ থেকে কর্মসূচির ঘোষণা দিচ্ছেন। আর যে কয়জন ধরা পড়ে জেলখানায় আছেন তাদের মধ্যে একজন দরবেশ (সালমান এফ রহমান) তিনি কারাগার থেকে ঝাড়ফুঁক দিচ্ছেন। তিনি মাঝেমধ্যে জেলখানা থেকে ঝাড়ফুঁক পাঠাচ্ছেন যে এতগুলো শ্রমিক নেমে গেলেই তো হয়।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর রমনার ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর সেমিনার হলে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনাসভার আয়োজন করে প্রকৌশলীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (অ্যাব)।

রুহুল কবীর রিজভী বলেন, ‘আমি জানি না তাদের বিচার প্রক্রিয়া কিভাবে চলছে। কিভাবে তারা সেখান থেকে বেরিয়ে এই কথাগুলো বলছে।

নিশ্চয়ই তাদের নানাভাবে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তারা সেটির সুযোগ নিয়ে কথাবার্তা বলছে।’
কারাগারে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘আমাদেরকে কারাগারে নিয়ে মাদকসেবী ও ফাঁসির আসামিদের সঙ্গে রাখা হতো। আমাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে নির্যাতন-নিপীড়ন করা হয়েছে।

শেখ হাসিনার নির্দেশে গুম-খুন করা হয়েছে। যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি রাষ্ট্রীয়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন।’
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম প্রসঙ্গে রিজভী আরো বলেন, ‘সরকার সংস্কারের কথা বলছে ভালো। কিন্তু সংস্কারের নামে আপনারা সময়ক্ষেপণ করবেন না।

এমন সংস্কার আনুন যাতে ফ্যাসিবাদ পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে। এমন সংস্কার নিয়ে আসুন যাতে মানুষ ন্যায়বিচার পায়। এমন সংস্কার আনুন যাতে ফ্যাসিবাদের কবর রচনা হয়। আর যাতে কোনো ফ্যাসিবাদের জন্ম না হয়। তা না হলে মানুষ ভালোভাবে নেবে না।’

অ্যাবের সভাপতি ও আইইবির প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব প্রকৌশলী এ কে এম আসাদুজ্জামান চুন্নুর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন এ্যাবের মহাসচিব প্রকৌশলী আলমগীর হাছিন আহমেদ প্রমুখ।

সাহিত্য

দুদকের জালে আটকা পড়েছেন মোমিন

সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের প্রতিক্রিয়া

রাজউকের কর্মচারি “কোটিপতি” মোমিন!

বেবিচকের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারির বিলাসী জীবন

স্বৈরাচার পালিয়েছে, সিরাজ ছিলেন, আছেন, থাকবেন!

ডা. স্বপ্নীলের নিবন্ধন বাতিলের নির্দেশ

অপু বিশ্বাসকে রেস্টুরেন্ট উদ্বোধনে বাধা

ঢাকার কামরাঙ্গীরচর এলাকায় একটি রেস্টুরেন্ট উদ্বোধনের কথা ছিল চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাসের। সবকিছু ঠিকঠাক হওয়ার পর সেই রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ ফেসবুকে প্রচারণা চালায়। রেস্টুরেন্ট উদ্বোধনে যাচ্ছেন অপু বিশ্বাস, এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সেখানকার স্থানীয় কিছু মানুষ ফেসবুকে লেখালেখি করেন। প্রতিবাদ জানান। বিষয়টি রেস্টুরেন্ট স্বত্বাধিকারীদের হয়ে কামরাঙ্গীরচর থানা পর্যন্ত গড়ায়। এরপর চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাসকে দিয়ে উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন রেস্টুরেন্ট–সংশ্লিষ্টরা।

বুধবার সন্ধ্যায় খবরটি নিশ্চিত করেন কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমীরুল ইসলাম।

এদিকে কামরাঙ্গীরচরের সেই রেস্টুরেন্ট পরে নিজেরাই উদ্বোধন করেন বলে জানা গেছে। এর আগে টাঙ্গাইলে পরীমনি এবং চট্টগ্রামে মেহজাবীন চৌধুরী শোরুম উদ্বোধন করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছিলেন।

কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমীরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বললেন, ‘উদ্বোধনের জন্য অপু বিশ্বাসকে আনবে, রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ যখন এমন প্রচার প্রচারণা শুরু করেছিল, তখন হুজুররা আপত্তি জানান। এখানে দুই শতাধিক মাদ্রাসা আছে। ফেসবুকে হুজুররা প্রতিবাদ জানান। তাঁরা বলেছিলেন, অপু বিশ্বাসকে উদ্বোধনে আনা হলে বিশৃঙ্খলা করবে। আমি ফেসবুকে লেখালেখির স্ক্রিনশটও পেয়েছি। এ বিষয়টা ডিসি স্যারের কাছেও জানানো হয়। আমার কাছে রেস্টুরেন্ট মালিকেরাও আসেন। তাঁরা জানান, অপু বিশ্বাসকে আনলে যদি হুজুররা বিশৃঙ্খলা করেন, আপত্তি জানান, তাহলে আমরা অপু বিশ্বাসকে আনব না। আমরা ব্যবসা করব। লোকজন নিয়ে চলতে হবে। কারও সাথে আমাদের বিরোধের দরকার নেই।’

এদিকে অপু বিশ্বাসের কামরাঙ্গীরচরে রেস্টুরেন্ট উদ্বোধনকে ঘিরে জাতীয় ইমাম পরিষদের মহাসচিব আ ফ ম আকরাম হুসাইন তিন দিন আগে একটি ফটোকার্ড বানিয়ে তাঁর ফেসবুকে পোস্ট করেন।

জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার বেলা তিনটায় ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের ‘সোনার থালা’ নামের একটি রেস্টুরেন্ট উদ্বোধনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল অপু বিশ্বাসের। বিষয়টি নিয়ে অপু বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর সঙ্গে কথা বলার সম্ভব হয়নি।

ফেসবুক লাইভে এসে ওসিকে পেটানোর হুমকি