,

অবশেষে গাজায় কার্যকর হলো যুদ্ধবিরতি

বিশেষ প্রতিনিধি

বিশেষ প্রতিনিধি

জানুয়ারি ১৯, ২০২৫ ৫:৫৩ অপরাহ্ণ

প্রায় তিনঘণ্টা বিলম্বের পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের মধ্য দিয়ে প্রায় ১৫ মাসের যুদ্ধে সাময়িক বিরতি নিশ্চিত হলো। রবিবারের (১৯ জানুয়ারি) এই চুক্তির ফলে মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিতিশীলতা কিছুটা কমবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

চুক্তি কার্যকর হওয়ার আধাঘণ্টা আগে থেকে নতুন কোনও হামলার খবর পাওয়া যায়নি বলে স্থানীয় বাসিন্দা ও স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক সময় ভোর সাড়ে ছটায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। তখন বরং ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হন। প্রায় তিন ঘণ্টা পর আন্তর্জাতিক সময় সোয়া নটায় অবশেষে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।

চুক্তি কার্যকরে বিলম্ব হওয়ার জন্য হামাসকে দায়ী করেছে ইসরায়েল। চুক্তির অধীনে যে-সব জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে, নেতানিয়াহুর চাওয়া অনুযায়ী তাদের তিনজনের নাম প্রদানে ব্যর্থ হওয়ার কারণেই এই বিলম্ব হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা।

স্পষ্ট কোনও ব্যাখ্যা প্রদান ছাড়া হামাস আত্মপক্ষ সমর্থন করে দাবি করেছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকরে তাদের আন্তরিকতার কোনও ঘাটতি ছিল না। মাঠ পর্যায়ে কারিগরি জটিলতার কারণে তারা সময়মতো জিম্মিদের নাম প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে।

পুরো বিষয়ে অবগত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বলেছেন, যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আগের ৪৮ ঘণ্টায় কোনও হামলা না হওয়ার নিশ্চয়তা চেয়েছিলেন সমঝোতাকারীরা। কিন্তু নির্ধারিত সময় পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত থাকায় নামের তালিকা প্রেরণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।

নির্ধারিত সময়ের দুঘণ্টা পর নামের তালিকা প্রেরণের কথা জানায় হামাস। ওই তালিকা পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। রবিবার প্রাথমিকভাবে মুক্তি পেতে যাওয়া তিন জিম্মির নাম জানিয়েছে হামাস, তারা হলেন রমি গোনেন, ডোরোন স্টেইনব্রেকার ও এমিলি ডামারি।

তাৎক্ষণিকভাবে অবশ্য নামগুলো নিশ্চিত করেনি ইসরায়েল।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অনুপ্রবেশ করে হামাস হামলা চালানোর পর থেকে এই যুদ্ধ শুরু হয়। হামলায় অন্তত এক হাজার ২০০ নাগরিক নিহত ও ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে দাবি করে আসছে ইসরায়েল। এরপরই হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার অভিপ্রায়ে গাজার সামরিক আগ্রাসন শুরু করে তেল আবিব। এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৭ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে গাজা স্বাস্থ্য অধিদফতর দাবি করে আসছে।

এই যুদ্ধের প্রভাব মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে। গাজা যুদ্ধের রেশ ধরে লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুথি ও ইরানের সঙ্গেও দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে ইসরায়েল। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে অস্থিতিশীল মধ্যপ্রাচ্যে কিছুটা শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা দেখা দিবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন